শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাতীয় জীবনে যুক্তির অভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় জীবনে যুক্তির অভাব

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, জাতীয় জীবনে যুক্তির অভাব প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের যে সবচেয়ে বড় শর্ত আরোপ করি, সবার অংশগ্রহণে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছানো, একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো, আজ জাতীয় জীবনে সেটার অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন (এনডিএফ) আয়োজিত দুই দিনের বিতর্ক উৎসবে আজীবন সম্মাননা নেওয়ার পর সুলতানা কামাল তার বক্তৃতায় এ কথা বলেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) চেয়ারপারসনসহ বিভিন্ন দায়িত্বে থেকে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করার ‘স্বীকৃতি’ হিসেবে তাকে এ সম্মাননা দেয় এনডিএফ।

এনডিএফ চেয়ারম্যান এ কে এম শোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, শিশু একাডেমির পরিচালক আনজির লিটন, লোটেল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক লোকমান হোসেন আকাশ ও এনডিএফ মহাসচিব মাহবুবুর রহমান শাকিল। যৌক্তিক বোধ-সম্পন্ন হয়ে আগামীর বাংলাদেশের হাল ধরতে তরুণ সমাজ ও বিতার্কিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, যারা বিতর্ক করে তারা নিজের মতামতটাকে যুক্তি দিয়ে উপস্থাপনের সাধনার মধ্যে থাকে। অন্যের মতামত মনোযোগ দিয়ে শুনে সেই মতামতের সঙ্গে নিজের মতামত মিলিয়ে কিংবা তার বিরুদ্ধে গিয়ে যুক্তিতর্ক দিয়ে উপসংহারে পৌঁছায়।

সুলতানা কামাল বলেন, বিতর্কের সংস্কৃতির মধ্যদিয়ে আমরা নিশ্চই এমন একটি আবহ তৈরি করতে পারব, যেখানে হানাহানি ও অন্যের উপরে অত্যাচার করে অন্যায়ভাবে মতামত চাপিয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা; যেটা আমাদের রাজনীতিতে, সমাজব্যবস্থায়, অর্থনীতিতে ও সংস্কৃতিতে দেখছি— সেটার পরিবর্তন আসবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নিজেকে ‘সবচেয়ে ভালো ও অগ্রসর’ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারলেও গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় একইভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে না পারায় ‘মনের মাঝে কষ্ট’ রয়ে গেছে বলে জানান এই মানবাধিকারকর্মী। তিনি বলেন, বিতর্কের মধ্যদিয়ে যে সাধনাটা তোমরা করে যাচ্ছ, তাতে তোমরা পরিবর্তনটা আনতে পারবে।’ সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, তোমরা মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারী। এই মুক্তি কূপমণ্ডূকতা থেকে মুক্তি, অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তি, মানুষের উপরে নির্যাতন করার প্রবণতা থেকে মুক্তি, বঞ্চনা থেকে মুক্তি, অবহেলা থেকে মুক্তি, অপমান থেকে মুক্তি, অপমান করার যে প্রবণতা সেটা থেকে মুক্তি। দুই দিনের এ বিতর্ক উৎসবে সারা দেশ থেকে প্রায় দুই হাজার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর