শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
মিউনিখে সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী

প্রমাণ হলে খালেদার শাস্তি হবেই

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রমাণ হলে খালেদার শাস্তি হবেই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে গতকাল জার্মানের মিউনিখ বিমানবন্দরে পৌঁছলে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে পারবে না বলে বিএনপির হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হবেই।

মিউনিখে গতকাল জার্মান আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় তিনি বলেন, যদি সত্যি কোর্টের কাছে এভিডেন্স থাকে চুরি করেছেন, তাহলে শাস্তি হবে। খবর বিডিনিউজের।

মিউনিখের ম্যারিয়ট হোটেলে স্থানীয় সময় গতকাল বিকালে এই সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেন, তিনি যদি চুরি না করে থাকেন, তাহলে শাস্তি হবে না।

চুরির ওই অর্থ তার ছেলে তারেক রহমান ও মোসাদ্দেক আলী ফালুর কাছে গচ্ছিত আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই মামলায় বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা এনে উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার আবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মামলার জন্য হাই কোর্টে ৫৩/৫৪ বার পিটিশন করেছে। এখন মামলা থেকে পালায়। মিথ্যা মামলা হলে পালানোর কী দরকার? এটা তো পরিষ্কার; এতিমখানার টাকা মেরে খেয়েছে। এটা তো কাগজপত্রে আছে।’ বিএনপি নেত্রী পাকিস্তানের সুরে কথা বলেন— মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান যে সুরে কথা বলে, খালেদা জিয়াও সে সুরে কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুখেও একই কথা শুনি। ৩০ লাখ মানুষ নাকি মারা যায়নি। তা নিয়েও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য আমাদের তালিকা থেকে একজন নিয়েছে। বিএনপির তালিকা থেকেও একজন নিয়েছে। তাতেও দোষ। সব কিছুতেই দোষ। তাদের সব কিছুতেই নাখোশ। তাদের সব কিছুতেই মানি না, মানব না। জামায়াতে ইসলামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি বলে বিএনপিও ওই নির্বাচনে যায়নি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নিজেরা নির্বাচন না করে যে ভুল করেছে, তার খেসারত তার দল দেবে। বাংলার জনগণ কেন দেবে? মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ থেকে এখন কেউই রেহাই পাচ্ছে না। বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার। কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। এর বিরুদ্ধে আমরা যা করার করব।

অনুষ্ঠানে জার্মানি ছাড়াও ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, সুইডেন ও নরওয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অংশ নেন। পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রে মুহাম্মদ ইউনূস নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও তার জন?্য যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধের হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কেও ভয় দেখানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ইউনূসকে গ্রামীণ ব?্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ ছাড়াও অসুবিধা হবে।

তিনি বলেন, আমেরিকার অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে সব সময় থ্রেট করত— ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ হয়ে যাবে।

জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে বৈঠক আজ : বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৩তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদানের জন্য তিন দিনের সরকারি সফরে গতকাল সকালে জার্মানির মিউনিখ পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইতিহাদ এয়ারলাইনসের (ইওয়াই ২৫৩) বিমানটি সকাল ৬টায় মিউনিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী আজ মিউনিখে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেবেন এবং একই দিনে সম্মেলনের প্যানেল আলোচনায় ‘জলবায়ু নিরাপত্তা : গুড কপ, ব্যাড কপ’বিষয়ক পর্যালোচনা সভায়ও যোগ দেবেন। বর্তমান বিশ্বের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় ‘বেস্ট থিঙ্কট্যাঙ্ক কনফারেন্স’ হিসেবে বিবেচিত এই সম্মেলনে বিশ্বের ২০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যোগ দিচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর