বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

কাদের খানের সোর্স চন্দনের ভগ্নিপতি সুবল নজরবন্দি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় কাদের খানের অন্যতম সহযোগী হিসেবে সম্পৃক্ত সুবল চন্দ্র সরকারকে রংপুরের সেবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ প্রহরায় নজরবন্দি রাখা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে তাকে আটক করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এই সুবল চন্দ্র কাদের খানের অন্যতম সোর্স চন্দন সরকারের ভগ্নিপতি এবং পেশায় মাংস বিক্রেতা (কসাই)। এমপি লিটনের কিলিং মিশনের অন্যতম খুনি মেহেদী হাসানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই সুবল চন্দ্রও কাদের খানের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন এবং লিটনের গতিবিধি সম্পর্কে তাদেরকে তথ্য প্রদান করতেন। এই খুনের সংশ্লিষ্টতায় যে সমস্ত মোবাইল কথোপথন টেপ করা হয়েছে তাতে চন্দন সরকার, মেহেদী এবং কাদের খানের ফোনালাপে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। হত্যার দিন লিটনের গতিবিধি এবং বাড়ির পরিবেশ সম্পর্কে খুনিদের সার্বক্ষণিক তথ্য প্রদান করতে সুবল চন্দ্র বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাজ মাস্টারপাড়ার এমপির বাড়ির আশপাশেই অবস্থান করে মোবাইল ফোনে তথ্য প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। পিত্ত থলির পাথর অপারেশনের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি সুবল চন্দ্র রংপুরের ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। পুলিশ তদন্ত পূর্বক তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরের ওই ক্লিনিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তাকে নজরবন্দি করে রাখে। এদিকে সুবল চন্দ্র সরকার সম্পর্কে জানা গেছে, তিনি সুন্দরগঞ্জের একজন টেরর এবং খুনের আসামি। ১৯৮৭ সালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে পুলিশ তার বাড়িতে রেইড করে অস্ত্র উদ্ধার করে। এই ডাকাতি মামলায় তিনি দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন। এ ছাড়া যে খুনের মামলাটিতে তিনি আসামি ছিলেন সেই মামলাটি মীমাংসা হওয়ায় তা থেকে তিনি রেহাই পান। কাদের খানের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ সহচর ও নীতিনির্ধারক জাতীয় পার্টির বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি রেজাউল হককে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমপি লিটনের হত্যাকাণ্ডে কাদের খানের সম্পৃক্ত হওয়ার খবর পেয়েই তিনি এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। কাদের খান এমপি থাকাকালীন সময়ে এবং পরবর্তী পর্যায়েও তার সব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন এই রেজাউল হক। তিনি মূলত কট্টর লিটনবিরোধী হিসেবেও এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশ : এমপি লিটন হত্যায় জড়িত কাদের খানসহ সব খুনি ও সহযোগীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তর এবং ফাঁসির দাবিতে গতকাল চণ্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহমেদের সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এম এ হাবীব সরকার, হান্নান সরকার, সমেস উদ্দিন বাবু, জাহাঙ্গীর আলম, সুনীল চন্দ্র, নাদিম হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, দেলোয়ার হোসেন, জাহেদুল ইসলাম জাভেদ প্রমুখ। সুন্দরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়ন ও সব ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর