বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

আগে রাষ্ট্রকে আইন মানতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগে রাষ্ট্রকে আইন মানতে হবে

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, রাষ্ট্র নৈতিকতা বজায় না রাখলে দেশে কোনো দিন শান্তি আসবে না। পৃথিবীতে শান্তি আসবে না। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনো প্রান্তে যদি, কোনো দেশে যদি অশান্তি থাকে, এটা কিন্তু ছড়িয়ে পড়বে পার্শ্ববর্তী      দেশে। তাই আইন প্রণয়ন করা, শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করা, প্রথমে রাষ্ট্রকে এটা বহাল রাখতে হবে। বজায় রাখতে হবে। মেনে চলতে হবে। এরপর বলতে হবে। আমি (রাষ্ট্র) আইন মানব। আপনারা (জনগণ) আইন মানুন। আপনারা আইনে চলেন। আমি আইন মানব না, আমি আইন অনুযায়ী চলব না, আর আমি যদি বলি আপনারা মানেন, তাহলে সেই রাষ্ট্র কোনোমতে চলবে না।’ আইনজীবীদের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগের কিছু ইনকনসিসটেন্স আছে। এর জন্য অনেকাংশে দায়ী আইনজীবীরা। আমরা বিচার করি। আপনাদের মতো বিজ্ঞ আইনজীবীরা আছেন, যারা আইনের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। অনেক দিন ধরে খেয়াল করছি। আজকে এ ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়ার মতো খুব কম আইনজীবী পাই। যার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের ব্যাখ্যা ও সিদ্ধান্ত বিচারকেরা নিজেরা লেখাপড়া করে দিই। এতে ত্রুটি থেকে যায়। আপনারা যদি অবদান না রাখেন, শুধু জামিন অথবা অন্য কোনো জিনিসের প্রতি চিন্তা করেন, তাহলে কিন্তু যে আদর্শের ওপর ভিত্তি করে মহান আইন পেশা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, এটা বিলীন হয়ে যাবে।’ নিম্ন আদালতের জমি দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোর্ট বন্ধকালে কোর্টের খালি জায়গায় রাতারাতি বিল্ডিং উঠে গেল। প্রতিটি জেলায় এ অবস্থা। একটা জেলায় দুই একর কোর্টের জায়গা বার দখল করে নিয়েছে। এই আইন পেশা যদি না থাকে, এই কোর্ট যদি না থাকে, তাহলে কী রকম হয়। আমি শুধু আপনাদের কাছে এই দায়িত্ব (জমি দখলের বিষয় বিবেচনা) দিয়ে দিলাম।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা (আইনজীবীরা) এগিয়ে আসবেন। কেন প্রধান বিচারপতি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বলবে, এখানে আইনের শাসন হচ্ছে না, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হচ্ছে না, বিচারকদের জন্য রুলস হচ্ছে না। সব কথা কি প্রধান বিচারপতি বলবে? আজ কোনো আইনজীবীকে গলা মিলিয়ে বলতে দেখলাম না। এটা ঠিক হচ্ছে না। কোর্ট-কাচারি রক্ষা করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কত দূর হলো এটা রক্ষা করতে হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলএলএম ল ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ‘বাসন্তী উৎসব ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এ কে এম ফয়েজ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আলী আহমেদ খোকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি এম আর হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এস এম মুনীর প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর