শিরোনাম
শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন মামলায় আসামি ১২০০ শাহিনুরের মৃত্যু শটগানে

ধর্মঘটে সংঘর্ষ গাবতলীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই চালকের সাজার প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট চলাকালে ঢাকার গাবতলীতে শ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলায় ৪৬ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার রাতে মামলা তিনটি করেন দারুস সালাম থানার এসআই যোবায়ের, এসআই বিশ্বজিৎ পাল ও ফেরদৌসি নামে এক নারী। এদিকে ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সংঘর্ষে নিহত বাসচালক শাহিনুরের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলছেন, শটগানের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। দারুস সালাম থানার এসআই বিশ্বজিৎ পাল জানান, পুলিশের করা একটি মামলায় সরকারি কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে বিশেষ ক্ষমতা আইনে। অন্যদিকে ফেরদৌসির করা তৃতীয় মামলায় তার ছেলেকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় সাত শ্রমিককে বুধবার রাতে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের এসব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল আদালতে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান। তিনি জানান, এজাহারে যে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে এদের মধ্যে কোনো পরিবহন নেতার নাম নেই। সবাই আন্দোলনকারী (শ্রমিক)। গত মঙ্গলবার ও বুধবারের পরিবহন ধর্মঘটে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় মঙ্গলবার রাতে গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পরিবহন শ্রমিকরা। সংষর্ঘ চলে পরদিন বুধবার দুপুর পর্যন্ত। বুধবার সকালে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শটগানের গুলিতে আহত হন বৈশাখী পরিবহনের বাস চালক শাহিনুর। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। গতকাল দুপুরে তার মরদেহ ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, শটগানের গুলিতেই শাহিনুর মারা গেছে। তার শরীরে ছোট ছোট বুলেট ছিল। অসংখ্য দাগে ভরা, অনেকটা ছররা গুলির মতো। ময়নাতদন্ত শেষে তারা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছেন। এ সময় মর্গে নিহতের স্বজনদের দেখা যায়নি। পরে পুলিশের প্রহরায় মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পশ্চিম বালিঘাটায় পাঠানো হয়েছে। লাশ গ্রহণকারী এসআই মহেশচন্দ্র সিংহ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষ করে আমরা লাশ লিগ্যাল গার্ডিয়ানের কাছে তুলে দিয়েছি। মর্গ থেকে জানানো হয়েছে লাশ পুলিশি প্রহরায় গ্রামে পাঠানো হবে। একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন, তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দিতে পুলিশ প্রহরা লাগছে কেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তা তো জানি না। তিন/চার জন পুলিশ সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

গাবতলীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের মামলায় সাতজন রিমান্ডে : রাজধানীর গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় সাত শ্রমিককে এক দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমাতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আলমগীর কবির এ আদেশ দেন।আসামিরা হলেন রফিকুল ইসলাম, হাসানুর, রবিন, সোহেল, ফজলে রাব্বী, আল আমিন ও এনামুল হক। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেককে এক দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।

সর্বশেষ খবর