শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনে না এলে বিএনপি একঘরে হয়ে যাবে

---------যুবলীগ চেয়ারম্যান

রফিকুল ইসলাম রনি

নির্বাচনে না এলে বিএনপি একঘরে হয়ে যাবে

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতি হচ্ছে কৌশলের খেলা। আর যাই হোক, জোড়াতালি দিয়ে রাজনীতি হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীন আগামী নির্বাচনে না এলে বিএনপি রাজনীতিতে এক ঘরে হয়ে পড়বে। গতকাল সকালে ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি হচ্ছে নালিশ পার্টি। যাকেই পায় তার কাছেই তারা নালিশ দেয়। লন্ডন-ঢাকা-গুলশান এই ত্রিমুখী সিদ্ধান্তের কারণে আজ এ দলটির জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায়। এমনিতেই এ দলটি জনবিচ্ছিন্ন কর্মসূচির কারণে দিন দিন ক্ষয়িষ্ণু হতে চলেছে, আর আগামী নির্বাচনে না এলে মুসলিম লীগের চেয়েও খারাপ পরিণতি হবে তাদের। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি না থাকলে সংগঠন শক্তিশালী করা যায় না। আগামী নির্বাচনের আগে আমাদের (আওয়ামী লীগের) প্রয়োজন জেলা-উপজেলায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করে নেতা-কর্মীদের এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ করা। ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিতে হবে। নেতাদের কর্মকাণ্ডে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। কিছু এমপি-মন্ত্রী ও নেতার ছত্রচ্ছায়ায় থাকা বেপরোয়া বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিরোধী দল ততটা না ক্ষতি করতে পারবে, যতটা পারবে কাছে থাকা চাটুকার, বেপরোয়া বাহিনী। তিনি বলেন, উন্নয়ন অর্জন যতই হোক, আমার-আপনার আচার-আচরণ খারাপ হলে উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। এখন থেকেই গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। ‘শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না’— বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায়ের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে বড় হলেও তাদের চালকের আসনে রয়েছে যুদ্ধাপরাধের দল জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের কথামতো বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি। এখন আবার হুঙ্কার দিচ্ছে আগামী নির্বাচনে আসবে না। তিনি বলেন, গয়েশ্বর, রিজভী সাহেবরা মুখে যতই বলুন তারা নির্বাচনে আসবেনই। তারা মিথ্যাবাদী রাখালের মতো। রাজপথে না নেমে পার্টি অফিসে বসে কেবল প্রেস ব্রিফিং করে রাজনীতি করেন। একে রাজনীতি বলে না। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীর তকমা কপালে লেপন করে এ দলটি দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের আন্দোলন জনগণের জন্য নয়, গদি ও ক্ষমতার জন্য। ক্ষমতায় থাকলে তারা লুটপাট করে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে দেশবিরোধী নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সংগঠনের নেতাদের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিশ্বশান্তির দর্শন জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এর পতাকাবাহী সংগঠন হলো যুবলীগ। এ দর্শনের মূল কথা হলো, সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্র জনগণ। জনগণের ক্ষমতায়নের ফলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। তিনি বলেন, সরকারের টানা আট বছরের উন্নয়ন দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে যুবলীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে কাজ করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা ও জেলায় কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করতে হবে। সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, একসময় ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ। আজকে বাংলাদেশ খাদ্য রপ্তানির দেশ। শুধু শীতকালেই নয়, সারা বছরই সবজি পাওয়া যায়। দুটি ফসল উৎপাদন হয়। দুর্ভিক্ষ হয় না। তিনি বলেন, ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩৩তম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। গম উৎপাদন দ্বিগুণ, সবজি উৎপাদন পাঁচ গুণ হয়েছে। মাছ উৎপাদনে বিশ্বের চতুর্থ স্থান অর্জনকারী দেশ বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জনকারী দেশে পরিণত হবে। এসব সম্ভব হয়েছে কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই।

সর্বশেষ খবর