বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিনা অপরাধে আটকরা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

গ্রহণযোগ্য ভোটের ব্যবস্থা নেবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনা অপরাধে আটকরা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বিনা অপরাধে কারাগারে আটক রয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট আটককারী কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। যদি কেউ রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, আইনে সে বিধানও রয়েছে। অপরাধীরা যাতে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে নূরুল ইসলাম মিলনের (কুমিল্লা-৮) প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সংসদ নেতা জানান, আমি জেলে থাকা অবস্থায় জানতে পারি, অনেক মানুষ বিনা অপরাধে জেলে আটক অবস্থায় আছে। এসব ব্যক্তির অবিলম্বে জেল থেকে মুক্ত করা প্রয়োজন। কিছু এনজিও এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে এসব আটক ব্যক্তির কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলমান আছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদকে আরও জানান, বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন ধরে আটক অপরাধীদের পরিসংখ্যান নিয়ে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছে। যারা কারাগারে আটক রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে। এসব মামলা তদন্ত পর্যায়ে থাকতে পারে বা বিচারিক পর্যায়েও থাকতে পারে। বিচারিক পর্যায়ে দীর্ঘসূত্রতা থাকলে এসব মামলায় কারাগারে আটক ব্যক্তিদের জামিনে মুক্তি প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা সংশ্লিষ্ট বিচারকের এখতিয়ারাধীন। সরকার এসব মামলা দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কার্যক্রম গ্রহণ করবে ইসি : আয়েন উদ্দিনের (রাজশাহী-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনারের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নবনিযুক্ত কমিশন ইতিমধ্যে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে দায়িত্বরত নির্বাচন কমিশন ভবিষ্যতে তাদের অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব অনুযায়ী সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে সরকার : কামাল আহমেদ মজুমদারের (ঢাকা-১৫) প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। নারীর উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ গভীর উপলব্ধি থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর নারী সমাজের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে সর্বপ্রথম জাতির পিতা নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষিত করেন। এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। যার ফলে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রথম সংসদেই নারীরা প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়।

ইন্দোনেশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দোনেশিয়ায় তিন দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমান গতকাল বেলা ৩টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জোট আইওআরএর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লিডারস সামিটে যোগ দিতে সোমবার জাকার্তা যান প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বাংলাদেশ সময় বেলা ১০টা ১০ মিনিটে জাকার্তার হালিম পারদানা কুসুমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ইন্দোনেশিয়ার শিল্পমন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্তার্তো এবং জাকার্তায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আজমল কবির তাকে বিদায় জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮টি দেশের সুলতান, প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী অংশ নেন এ সম্মেলনে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো মঙ্গলবার সকালে জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে লিডারস সামিটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ওমানের সুলতান ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা, ইয়েমেন, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, মাদাগাস্কার ও মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট সম্মেলনে অংশ নেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও মরিশাসের সরকারপ্রধান। এ ছাড়া ভারত, সেসলস, কমোরসের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী অংশ নেন লিডারস সামিটে।  সম্মেলনে ‘শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সমুদ্র সহযোগিতা জোরদার’ শীর্ষক বিতর্কে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনের ফাঁকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইন্দোনেশীয় সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

 প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে মিয়ানমার ইস্যু উত্থাপন করে বলেন, মিয়ানমারের শরণার্থী বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা এবং এর সমাধান প্রয়োজন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার সঙ্গে বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি ‘ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট’ (এফটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়ে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সে দেশে বাংলাদেশিদের গমনের জন্য ভিসা সহজীকরণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।

সর্বশেষ খবর