পাবনার চাটমোহরে সেন্ট রিটার্স চার্চের নিরাপত্তা প্রহরী গ্রিলবার্ড কস্তাকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর অবস্থায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল ভোরের এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পাবনার পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিআইডিসহ বিশেষ বাহিনীর বিভিন্ন টিম।
আহতের ভাই বকুল কস্তা জানান, গতকাল ভোর ৪টার দিকে তিন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত উপজেলার মথুরাপুর সেন্ট রিটার্স চার্চে এসে নিরাপত্তা প্রহরী গ্রিলবার্ড কস্তার কাছে চার্চের ফাদারের কক্ষের চাবি চায়। তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুর্বৃত্তরা জোরপূর্বক ঘুমন্ত ফাদারের কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। গ্রিলবার্ড এতে বাধা দিলে তারা চাপাতি দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় চাটমোহর খ্রিস্টান পল্লীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতের স্ত্রী মেরী কস্তা বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা ভীতসন্ত্রস্ত। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে তারা আবারও আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারে।’মথুরাপুর খ্রিস্টান ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপিত মানিক যোসেফ কস্তা বলেন, ‘এই চার্চে দীর্ঘদিন ধরে কিছু বখাটে আমাদের মা-বোনদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। অনেকেই এসে চার্চ ক্যাম্পাসে মাদক সেবন করে। তাদের বাধা দিলে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এই ক্যাম্পাসে শতাধিক ছাত্রীর আবাসনব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে লামা, আলীকদম, রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ছাত্রীরা বসবাস করে লেখাপড়া করছেন। প্রাচীর টপকিয়ে বখাটেরা ভিতরে ঢুকে মেয়েদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। সম্প্রতি আলম নামের এক বখাটেকে ধরে পুলিশে দিলে সে কয়েক মাস জেল হাজতে থেকে বের হয়ে এসেছে।’ সে পুনরায় এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সকালে উপজেলার লাউতিয়া গ্রাম থেকে রাজীব, মুরাদ ও ফরিদ নামে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, অনেক চমকপ্রদ তথ্য পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও তদন্তের স্বার্থে তিনি তা প্রকাশ করেননি।
পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান, এটি জঙ্গি হামলা না অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চার্চের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলেও জানান তিনি।