রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তদেশীয় সহায়তা প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তদেশীয় সহায়তা প্রয়োজন

এ কে এম শহীদুল হক

জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের সফলতার বিষয়টি নিয়ে ইন্টারপোলসহ বিশ্বের অনেক দেশই সাধুবাদ জানিয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্য দেশের অপরাধীরা আত্মগোপন করে থাকে। এর মূল উৎপাটনের জন্য প্রয়োজন আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা। আর এ জন্যই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধানদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইন্টারপোল ও বাংলাদেশ পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী ‘চিফ অব পুলিশ কনফারেন্স’ শুরু হচ্ছে। গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এসব কথা বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। অনেক দেশের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশের মানুষের সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনা, জীবনধারা এবং অর্থনৈতিক কাঠামো প্রায় একই। এ অঞ্চলে অপরাধের ধরন এবং বৈশিষ্ট্যেও অনেক মিল। এই অপরাধীদের দমনে প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা ও সমন্বয়। বাংলাদেশে বাইরের কোনো জঙ্গি সংগঠনের তত্পরতা নেই উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, যা আছে তা এদেশেই সৃষ্টি। অনেক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নেপথ্যের অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আমরা জানতে পেরেছি। এদের দমনে পুলিশ কাজ করছে। জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে ব্লগারসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়াসহ কয়েকটি স্থানে হামলা করেছে। এসব ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে নানা তথ্য পাওয়া গেছে। ৬-৭টি জঙ্গি আস্তানায় সফল অপারেশন করা হয়েছে। এতে পুলিশ সফলতাও পায়, যা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে।

শহীদুল হক বলেন, সম্মেলন চলাকালে ইন্টারপোল মহাসচিব এবং বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রধানদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হবে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। জঙ্গিবাদ দমন, মানব পাচার, অর্থনৈতিক অপরাধ এবং সন্ত্রাসী অর্থায়ন, মাদকদ্রব্য পাচার রোধ, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় স্থান পাবে।

পাকিস্তানের কোনো প্রতিনিধি কেন আসেনি? জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, পাকিস্তানকে এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য এআইজি এনসিবি’র মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। জানা গেছে, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে দক্ষিণ এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী ১৪টি দেশের পুলিশ প্রধানদের নিয়ে জোট গঠন হচ্ছে। সম্মেলনে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামের ৫৮ জন অতিথি অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া ইন্টারপোল, ফেসবুক, যুক্তরাষ্ট্রের আইজিপিআই, এফবিআই, আসিয়ানপোল, আইসিআইটিএপি ইত্যাদি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন শেষে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধের কর্মপন্থা নির্ধারণ করে যৌথ ঘোষণা স্বাক্ষর হবে।

সর্বশেষ খবর