শিরোনাম
শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নেওয়া টাকা ফেরত পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক-এগারো পরবর্তী সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে আদায় করা কয়েকশ’ কোটি টাকা ফেরত পাবেন ব্যবসায়ীরা। ১১ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ওই অর্থ ফেরত দিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল খারিজ করেছে আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করিম ও খায়রুল আলম চৌধুরী। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। জানা গেছে, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ১২০০ কোটি টাকার বেশি নেওয়ার খবর প্রকাশিত হলেও হাই কোর্টে এ বিষয়ে ১১টি রিট করা হয়েছে। যারা রিট করেছেন, আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে এখন কেবল তারাই এ সুবিধা পাবেন।

১১ রিটের বিপরীতে মোট অর্থ ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যারা টাকা ফেরত পাবেন—এস আলম গ্রুপের সাতটি প্রতিষ্ঠানের ৬০ কোটি টাকা, দি কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড এবং বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেডের ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, মেঘনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের ৫২ কোটি টাকা, বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের ১৫ কোটি টাকা, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের ৯০ লাখ টাকা, ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৬০ লাখ টাকা, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা,  ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ৩৫ কোটি টাকা, ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্টের ১৮৯ কোটি টাকা, ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের ৬৫ লাখ টাকা। আইনজীবী আহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, টাকা ফেরত চেয়ে যারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, প্রথমে তারাই এ সুবিধা পাবেন। অন্যদের টাকা ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করতে হবে। তবে কবে তারা টাকা পাবেন, কীভাবে তাদের টাকা দেওয়া হবে, আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এর নির্দেশনা জানা যাবে। আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, সরকার এত টাকা কোথা থেকে ফেরত দেবে তা চিন্তার বিষয়। সরকার সিদ্ধান্ত নিলে রিভিউ আবেদন করা হবে। জরুরি অবস্থা জারির পর দুর্নীতি দমন অভিযানের কথা বলে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়। তখনই ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায় করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় ১১ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির পক্ষে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিটকারীদের অর্থ ফেরত দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এর বিরুদ্ধে আপিল করলে হাই কোর্টের রায় স্থগিত হয়।

সর্বশেষ খবর