বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক আয়োজন আইপিইউ সম্মেলন

অংশ নিচ্ছেন ৮০ দেশের স্পিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) চার দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এবং অতিগুরুত্বপূর্ণ এক আন্তর্জাতিক আয়োজন।

আইপিইউর দায়িত্বশীল কমকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১১৫টি দেশের পার্লামেন্টের ১২০০ সদস্য এ সম্মেলনে যোগদান করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। এই প্রতিনিধিদের মধ্যে ৮০টি দেশের পার্লামেন্টের  স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন। কিউবা এবং সুইডেনের স্পিকার সাধারণত আইপিইউ সম্মেলনে অংশ নেন না। কিন্তু এবারের সম্মেলনে তারা নিজ দেশের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল যোগ দিচ্ছে বলে এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবচ্ছবি আরও উচ্চপর্যায়ে উন্নীত করার এক অনন্য সুযোগ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকমহল। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব এরইমধ্যে  দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। ফলে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এমপিদের চিন্তা-ভাবনা এবং টেকসই উন্নয়নে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের সম্ভাব্য ভূমিকা বিবেচনায় এই সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইপিইউ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বক্তব্য দেবেন আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের একজন প্রতিনিধি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর স্পিকার অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়ন করবেন। এরপর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ২, ৩, ৪ ও ৫ এপ্রিল টানা চার দিন সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশন চলবে। তবে মূল আকর্ষণ থাকবে ‘বৈষম্য’ বিষয়ে সাধারণ বিতর্ক। এ বিতর্কে বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টের স্পিকার বা প্রতিনিধি দলের প্রধানগণ অংশ নেবেন। এ ছাড়া নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ভারতের কৈলাস সত্যার্থীও এ বিতর্কের অন্যতম আলোচক থাকবেন। সম্মেলনে নারী ও তরুণ সংসদ সদস্যদের জন্যও আলাদা অধিবেশন থাকবে। সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশেই বাণিজ্য মেলার স্থানে একটি মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই মেলায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য এবং রপ্তানির জন্য সম্ভাবনাময় পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এ ছাড়া  অতিথিদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য মেলায় কিছু গ্রামীণ পরিবেশের চিত্র উপস্থাপনের ব্যবস্থা থাকবে।

বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশি পণ্য সম্পর্কে পরিচিত করানোর এটি একটি অসাধারণ সুযোগ বলে মনে করছেন আয়োজকরা। আইপিউ সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি, অর্থায়ন, নিরাপত্তা ও আতিথেয়তা তথা সমন্বয়ের দায়িত্বে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। পৃথিবীর ১৭০টি দেশের পার্লামেন্টের ৪৬ হাজার সদস্য ৬৫০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে আইপিইউ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি আইপিইউ প্রেসিডেন্ট  নির্বাচিত হয়েছেন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আইপিইউ নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত। সম্মেলন সম্পর্কে আইপিইউ প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বাাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ সম্মেলনে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। আমি এদেশের নাগরিক এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের একজন সদস্য। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে যেসব অতিথি যোগ দেবেন, তারা জনগণের প্রতিনিধি। ফলে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের সঙ্গে সেতুবন্ধন স্থাপনের একটা সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই সম্মেলন।

সর্বশেষ খবর