বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

জঙ্গিদের অর্থ দিচ্ছে কারা, খতিয়ে দেখা হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারাবিশ্বে নতুন এক উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সেটা হচ্ছে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ। অনেক উন্নত দেশে পড়াশোনা করতে গিয়ে মেধাবী, শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত ছেলেমেয়েরা কীভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যায়, জঙ্গিবাদের পথে যায়, সেটা আমার কাছে বোধগম্য না। তিনি বলেন, আমাদের দেশেও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমার প্রশ্ন, কারা এদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে? কারা এদের টাকা-পয়সা দিয়ে মদদ দিচ্ছে? কারা এদের মানুষ খুন করতে উৎসাহিত করছে? তা খতিয়ে দেখতে হবে। গতকাল সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী  শিক্ষার্থীদের ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ২০১৩ ও ২০১৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ পাওয়া ২৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৬ জনের হাতে পদক তুলে দেন শেখ হাসিনা। অন্যদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। দেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি নাশকতার ঘটনা ও জঙ্গিদের আত্মঘাতী হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ধর্ম ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে কোথাও মানুষ হত্যার কথা বলা হয়নি। নিরীহ মানুষ হত্যা করে একজন বেহেশতে চলে যাবে, এটা কী করে হয়! আত্মঘাতী হওয়া, আত্মহত্যা করা এটা আমাদের ধর্মে মহাপাপ কাজ। সেই মহাপাপের পথে ওরা কী করে যায় পবিত্র ইসলাম ধর্মের নামে? বিপথগামী তরুণদের উগ্রবাদ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উগ্রবাদ ধ্বংস এনে দেয়। উগ্রবাদের নামে তারা যে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে বদনামের ভাগি করছে, সেটা তারা বোঝে কি না জানি না। কেন তারা এ ধরনের বিপথে যাচ্ছে, আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। কোমলমতি তরুণদের এই বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ছেলেমেয়েদের উগ্রবাদ থেকে ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার পড়াশোনা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের সার্বিক ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। যেন তারা বিপথে না যায়, এই উগ্রবাদের কবলে পড়ে নিজেদের জীবনটাই না নষ্ট করে ফেলে। আত্মহননের চিন্তা যেন তাদের মধ্যে না থাকে। আত্মঘাতীমূলক কাজ যেন তারা না করে। তারা যেন ধর্মান্ধ হয়ে না যায়। আমাদের প্রত্যেক অভিভাবক, শিক্ষক, ইমাম সাহেবসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাদকাসক্তিকে দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমস্যা আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই মাদকাসক্তির হাত থেকে ছেলে-মেয়েদের উদ্ধার করতে হবে। এ জন্য সবচেয়ে দায়িত্ব হচ্ছে অভিভাবক ও শিক্ষকদের। ছেলেমেয়েদের সচেতন করতে হবে, বলতে হবে এটা ভুল পথ। অভিভাবকদের নিজ নিজ সন্তানের প্রতি লক্ষ্য রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে। তাহলে দেশকে ভালোবাসতে শিখবে। তাদের মানসিকতা এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন তারা মনে করে দেশটাকে তাদেরই গড়ে তুলতে হবে, দেশের কল্যাণ করতে হবে, দেশের মানুষের জন্য ভালোবাসা থাকবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েরা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে কি না— সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে তারা বিপথে যেতে না পারে।

সর্বশেষ খবর