শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হামলায় আরও একজনের মৃত্যু

প্রতিদিন ডেস্ক

লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার দায়ে অভিযুক্ত খালিদ মাসুদ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবারে ৫২-বছর বয়সী এই ব্যক্তি প্রথমে একটি গাড়ি টেমস নদীর উপরের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর চালিয়ে দেন এবং এরপর পাশেই অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশকে ছুরিকাহত করে হত্যা করেন। পুলিশ গতকাল জানিয়েছে, খালিদের জন্মের সময় বাবা-মা তার নাম দিয়েছিল আদ্রিন রাসেল অ্যাজায়ো, যদিও শুরুতে পুলিশ বলেছিল ওই ব্যক্তি জন্মেছিলেন আদ্রিয়ান এলম্স্ নামে। আদ্রিন রাসেল অ্যাজায়ো নামটি নিশ্চিত করেছেন লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের অ্যাসিসট্যান্ট ডেপুটি কমিশনার মার্ক রাওলি। তার জন্ম কেন্টের ডার্টফোর্ডে ১৯৬৪ সালের ক্রিস্টমাসের দিন, অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর। ফলে এই সম্ভাবনা এখন বাড়ছে যে তিনি হয়তো ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নিয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করেছেন। যদিও এ ব্যাপারটি এখনো কোনো কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে এ তথ্য তদন্তকারীদের হয়তো সাহায্য করবে যে, কেন ওই ব্যক্তি এ রকম একটি হামলা করলেন। পুলিশ অবশ্য যখন তার নাম প্রথম প্রকাশ করে, তখনই বলেছিল যে খালিদ মাসুদ বেশ কয়েকটি নাম ব্যবহার করতেন। তিনি সর্বশেষ ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে থাকতেন। আর যে গাড়িটি তিনি হামলার কাজে ব্যবহার করেন, সেটি তিনি ভাড়া করেছিলেন বার্মিংহ্যাম থেকে। মাসুদ একসময় শিক্ষকতা করতেন এবং তিনি ছিলেন তিন সন্তানের জনক। এদিকে ওই সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয় মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি। এতে জড়ো হন হাজারো লন্ডনবাসী। তারা যখন নিহতদের জন্য শোক পালন করছেন, তখন খবর এলো হামলায় গুরুতর আহত ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এতে করে হামলায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ এ। ওই হামলার ঘটনায় পুলিশ গতকাল আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছেন। এই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনাকে তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে মনে করছে পুলিশ। হামলায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসেবে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্মান্তর করে মুসলমান হওয়া খালিদ মাসুদ কীভাবে জঙ্গিবাদে ঝুঁকলেন সে বিষয়টিই পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তিনি কোন সম্প্রদায় থেকে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকেছিলেন কিনা কিংবা বিদেশ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, নাকি অনলাইন প্রচার থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লন্ডন পুলিশের এসিসটেন্ট ডেপুটি কমিশনার মার্ক রাউলি। তার সম্পর্কে পুলিশ আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে। মাসুদ কার কার সঙ্গে মিশতেন এবং সাম্প্রতিক দিগুলোতে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন সে সম্পর্কে পুলিশ তথ্য চায় বলে জানান রাউলি। হামলার ঘটনা ঘটানোর আগে গোয়েন্দাদের চোখে মাসুদ ছিলেন ছোটখাট অপরাধী, বড় কোনো হুমকি নন। সে কারণে সাম্প্রতিক গোয়েন্দা নজরদারিতেও ছিলেন না তিনি।অতীত কয়েকটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে মাসুদ ব্রিটিশ নিরাপত্তা সংস্থা এমআইফাইভ এর নজরে পড়েছিলেন। তার সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি আঁচ করা গেলেও কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তার কি ধরনের যোগাযোগ ছিল তা স্পষ্ট জানা যায়নি। ইসলামিক স্টেট (আইএস) তাকে নিজেদের সৈনিক বলে দাবি করলেও দলটির সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ ছিল কিনা তা জানায়নি। উল্লেখ্য, গত বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের উপর দিয়ে পার্লামেন্টের দিকে আসার পথে সজোরে গাড়ি চালিয়ে তা পথচারীদের ওপর উঠিয়ে দেন এক হামলাকারী। এএফপি, বিবিসি

সর্বশেষ খবর