সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ রোখার প্রত্যয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার ও জাবি প্রতিনিধি

জঙ্গিবাদ রোখার প্রত্যয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

মহান স্বাধীনতা দিবসে গতকাল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ এবং যে কোনো মূল্যে জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে গতকাল জাতি উদযাপন করেছে ৪৭তম মহান  স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। গৌরবের এই ক্ষণে সবারই দৃঢ় প্রত্যয় ছিল বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোনো ষড়যন্ত্র চলবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বিজয়ের গৌরবে নিজের মতো। যে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে মহান এই স্বাধীনতা অর্জিত সেই বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল ভোরের আলো ফোটার আগেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামে। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অর্ঘ্যে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধ। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনসহ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ছেলে-বুড়ো সবাই। রক্তস্নাত লাল-সবুজের পতাকা হাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কণ্ঠেই ধ্বনিত হয়েছে ‘জঙ্গিবাদকে রুখে দাঁড়াও, সাম্প্রদায়িকতা-যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারমুক্ত স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়’। দিবসের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় প্রত্যুষে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। প্রায় ১৫ মিনিট সময় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে অবস্থান করেন। রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করার পর উপস্থিত সবার সঙ্গে করমর্দন করেন। সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোরদের সমাবেশে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং বক্তব্য রাখেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল ছিল সরকারি ছুটি। দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে বেতার, টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ভবনে, বাড়িঘর, যানবাহন ও দোকানে উড়ানো হয় জাতীয় পতাকা। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে করা হয় আলোকসজ্জা। সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মসজিদে বিশেষ মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত, দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাতেও অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ প্রার্থনা সভা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন-প্রতিষ্ঠান আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল ফারুক খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন শেষে মোনাজাত করে। টুঙ্গিপাড়াতেও নামে মানুষের ঢল। শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলে ফুলে ভরে উঠে স্বাধীনতার মহান স্থপতির মাজারের বেদিমূল। সশস্ত্র বাহিনীও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্র হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ভোরে কেন্দ্রীয় ও সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে। সূর্যোদয়ের সময় দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। পরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা ত্যাগ করার পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়ক। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এমপির নেতৃত্বে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা যুবলীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের নেতৃত্বে মহিলা যুবলীগ, সাফিয়া খাতুন ও মাহমুদা ক্রিকের নেতৃত্বে মহিলা আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা সংগঠন এ সময় শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

স্মৃতিসৌধে খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা : স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে কিছু সময় তিনি নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার  মোশাররফ  হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান,  মো. শাহজাহান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, রুহুল আল চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির  খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের  নেতারা চেয়ারপারসনের সঙ্গে ছিলেন। পরে  বেলা পৌনে ১১টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন খালেদা জিয়া। কবর প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে মোনাজাতেও অংশ নেন তিনি। যু্ব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, মৎস্যজীবী দল, ছাত্রদল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকেও জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

অন্যান্য দল ও সংগঠন : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হলেও দেশ এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। রাজনৈতিক দলাদলির কারণে দেশ পিছিয়ে পড়েছে। এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে জাসদের একাংশের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, অনেক বাধা অতিক্রম করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখন জঙ্গিবাদকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে, বৈষম্য দূর করে দুর্নীতিবাজ ও দলবাজমুক্ত দেশ গঠন করতে হবে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম, মঈন উদ্দীন খান বাদলের নেতৃত্বে শহীদ বেদিতে ফুল দেয় জাসদ। স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। সব বাধা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। মেয়র সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, আনিসুল হকের নেতৃত্বে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ ছাড়াও সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণবিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), আনসার-ভিডিপি, লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, গণফোরাম, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, বাসদ, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রমৈত্রী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাকের পার্টি, উদীচী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, এলডিপি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাসদ, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, যুবলীগ, যুবদল, যুব ইউনিয়ন, ছাত্রদল, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপি), বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, পাসপোর্ট অধিদফতর, কর্মসংস্থান ব্যাংক, কর্মজীবী নারী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলা একাডেমি, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম, এনডিপি, সজাগ, বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, এডাব, নজরুল ইনস্টিটিউট, আইন সমিতি, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বিআইএসএফ, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, ন্যাপ, স্বাচিপ, বিএমএ, তরীকত ফেডারেশন, এনসিটিবি, বার কাউন্সিল, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানানোর এই ঢল থেকে বাদ যাননি সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) চিকিৎসাধীনরাও। অন্যের সহায়তা নিয়ে হুইল চেয়ারে চেপে কিংবা ক্র্যাচে ভর দিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসেন তারা। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সৌধ প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায় বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। পোশাকধারী পুলিশ-র‌্যাব ছাড়াও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কড়া নজরদারিতে ছিল গোটা সৌধ এলাকা।

অন্যান্য দলের কর্মসূচি— জাতীয় পার্টি : জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় ওলামা পার্টি। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ইসলাম ধর্মের সঙ্গে জঙ্গিবাদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গুরুত্ব দেন তিনি। ওলামা পার্টির সভাপতি আলহাজ কারী হাবিবুল্লাহ বেলালীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মাওলানা খন্দকার মো. শফিউদ্দিন, মাওলানা খলিলুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা আবদুর রব প্রমুখ।

তরিকত ফেডারেশন : ধানমণ্ডির কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে তরিকত ফেডারেশন। সংগঠনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব এম এ আউয়ালসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। এম এ আউয়াল বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করতে চায়। তারা ৩০ লাখ শহীদকে অস্বীকার করতে চায়। তারা পাকিস্তানের দোসর হিসেবে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে চায়।

জাতীয় প্রেস ক্লাব : জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় প্রেস ক্লাব আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান। বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবেদ খান, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, শাহেদ চৌধুরী, শাহিন রেজা নূর প্রমুখ।

খেলাফত আন্দোলন : রাজধানীর জামিযা নুরিয়া ইসলামিয়া কামরাঙ্গীরচর মাদ্রাসায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করে। সংগঠনের আমির শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দেশের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জাতিকে অবগত করতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ওলামায়ে কেরামের যে ভূমিকা ছিল তা জাতির কাছে তুলে ধরতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন : ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল। বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায়  জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।

ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : সংগঠনের পল্টনের কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখেন মোস্তফা বশীরুল হাসান, মোস্তফা তারেকুল হাসান, ডা. সাখাওয়াত হুসাইন, মাওলানা আবুবকর সিদ্দিক প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ৪৬ বছরেও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করতে পারিনি। ক্ষমতার পালাবদল হলেও দালালির পালাবদল হয় না।

সর্বশেষ খবর