শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

দেশকে নতুন উচ্চতায় নেবে আইপিইউ সম্মেলন

জাহাঙ্গীর আলম

দেশকে নতুন উচ্চতায় নেবে আইপিইউ সম্মেলন

সাবের হোসেন চৌধুরী

ঢাকায় আইপিইউ (ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন) সম্মেলন বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এই সম্মেলনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে একটি ইতিবাচক বাংলাদেশের পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে। পৃথিবীর নাগরিকদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকদের সেতুবন্ধন রচনা হবে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার কাকরাইলের কার্যালয়ে আইপিইউ প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

আগামী ১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আইপিইউর চার দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন হবে। এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক আয়োজন। পৃথিবীর ১৭০টি দেশের পার্লামেন্টের ৪৬ হাজার সদস্য ৬৫০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে আইপিইউ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি আইপিইউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আইপিইউ নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত। সাবের হোসেন চৌধুরীর সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আইপিইউ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে কোন বিষয়টি কাজ করেছে?

সাবের হোসেন চৌধুরী : আমরা ১৯৭১ সালে আইপিইউর সদস্য পদ লাভ করি। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসন জারির পর সংবিধান স্থগিত হলে বাংলাদেশের আইপিইউ সদস্য পদ স্থগিত করা হয়। 

আমি আইপিইউর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চেয়েছিলাম বাংলাদেশে একটা সম্মেলন হোক। তাই উদ্যোগটা নিই। আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি এবং তার অনুমতি নিই। তিনি আমাকে খুবই উৎসাহ দেন। আইপিইউর জেনেভা সম্মেলনে প্রাথমিক প্রস্তাবটা আসে আমাদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মাধ্যমে। এই মার্চ-এপ্রিলে সম্মেলন করার ব্যাপারে রাশিয়া ফেডারেশনের খুবই আগ্রহ ছিল। কিন্তু যখনই আমি আইপিইউর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঢাকায় সম্মেলন করার প্রস্তাব করেছি, তখন তারা  সেটা মেনে নেয়। এ বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে রাশিয়ায় দ্বিতীয় সম্মেলন হবে।

ঢাকায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্ধারিত সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায় গুলশানের হলি আর্টিজানের দুঃখজনক ঘটনায়। তখন সিদ্ধান্ত নিই, আমরা যদি বাংলাদেশে এমন একটা আয়োজন না করি তবে বিশ্ববাসীর কাছে একটা ভুল বার্তা যাবে। একটা সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য এত বড় একটা আয়োজন বাংলাদেশে হবে না, তা হতে পারে না।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এই সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের কী প্রাপ্তি হতে পারে?

সাবের হোসেন চেচ্ধুরী : তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোনো দেশ সম্পর্কে সবাই একটা ধারণা পেয়ে যান। এই যে বাংলাদেশে এতগুলো লোক আসছেন, তারা কোন অবস্থানের, কী মাপের, কী মানের? তারা খুবই উঁচু মাপের লোকজন। বাংলাদেশ এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ব সংসদীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবে। এটা একটা বড় প্রাপ্তি। বিভিন্ন দেশের জাতীয় পত্রিকায় যদি বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্পর্কে বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়, তাহলে যতটুকু প্রভাব পড়বে, তার চেয়েও শতগুণ বেশি প্রভাব পড়বে যদি সেসব দেশের জনপ্রতিনিধিরা আমাদের দেশে আসেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে সেই কাজটিই হচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরা তথা বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরা যাবে এই সম্মেলনে। তা ছাড়া আমাদের রপ্তানি পণ্য পোশাক শিল্প থেকে শুরু করে পাট শিল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা স্বচক্ষে দেখার মাধ্যমে একটা ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের জানানোর অন্যতম সুযোগ এই সম্মেলন। সার্বিকভাবে আমি মনে করি এই সম্মেলন বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশেই বাণিজ্য মেলার স্থানে একটি মেলা আয়োজন করা হবে। এ মেলায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এ ছাড়া অতিথিদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য মেলায় কিছু গ্রামীণ পরিবেশের চিত্র উপস্থাপনের ব্যবস্থা থাকবে।

বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠিত একটা ধারণা আছে যে, এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। এখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই। এ সম্মেলনে একটি ইতিবাচক বাংলাদেশকে তুলে ধরবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে। বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের পূর্ব ধারণা এই একটি মাত্র ইভেন্টের মাধ্যমেই পরিবর্তন করে দিতে পারি। তা ছাড়া এ সম্মেলনে যারা যোগ দিচ্ছেন, তারা জনগণের প্রতিনিধি। ফলে পৃথিবীর নাগরিকদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকদের সেতুবন্ধন রচনার একটি অন্যতম সুযোগ হচ্ছে এ সম্মেলন। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এ সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

সাবের হোসেন চৌধুরী : এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১১৫টি দেশের পার্লামেন্টের ১২০০ সদস্য এ সম্মেলনে যোগদান করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। এ প্রতিনিধিদের মধ্যে ৮০টি দেশের পার্লামেন্টের স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন। বেশ কিছু দেশ আছে, অতীতে আইপিইউ সম্মেলনে সে দেশের স্পিকার নেতৃত্ব দেননি। কিউবা এবং সুইডেনের স্পিকার সাধারণত আইপিইউ সম্মেলনে অংশ নেন না। কিন্তু এবার বাংলাদেশের সম্মেলনে তারা নিজ দেশের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।

আমার মনে হয়, বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্ব পর্যায়ে একটা ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এটা অনেককেই অবাক করেছে, যে দেশকে বলা হয়েছিল তলাবিহীন ঝুড়ি, সেই দেশ কীভাবে এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক খাত, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সব কিছুতেই পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ রোল মডেল। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন ভারতের চেয়েও ভালো। সুতরাং বাংলাদেশ নিয়ে তাদের আগ্রহ এবং এখানে আসার ব্যাপারে এটা একটা বড় কারণ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আমাদের দেশের গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিশ্বে আলোচনা-সমালোচনা আছে। বিশেষ করে ৫ জানুয়ারির মতো একটি প্রশ্নবোধক নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংসদ গঠিত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এ সম্মেলনে আমাদের প্রাপ্তির সম্ভাবনা কতটুকু? 

সাবের হোসেন চৌধুরী : দেশের অন্যতম একটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এরা স্বেচ্ছায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে ছিল। যখন একটি দল স্বেচ্ছায় নিজেদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে আড়ালে রাখতে চায়, সেটা তো সেই দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তাদের তো নির্বাচনে আসতে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে আরেকটি দল নির্বাচনে থাকলে মানুষের পছন্দের জায়গাটা ব্যাপক হতে পারত। যত বেশি দল অংশগ্রহণ করে তত বেশি জনগণের পছন্দের সুযোগ বাড়ে। তারা নির্বাচনে আসেনি। আশা করি, ভবিষ্যতে আসবে।

আইপিইউ সম্মেলন যে দেশে অনুষ্ঠিত হবে, সে দেশের কোনো বিষয়ে স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য দেশের আইনসভার সদস্যরা প্রশ্ন তুলতেই পারেন। সেখানে বাংলাদেশের যে অবস্থান তা আমাদের সংসদ সদস্যরা স্পষ্ট করে তাদের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

একটা উদাহরণ দিই। অক্টোবর মাসে সেন্টপিটার্সবার্গে আইপিইউর যে পরবর্তী সম্মেলন হবে তা নিয়ে ইউক্রেনের জোর আপত্তি ছিল। তারা বলেছিলেন, সেখানে তারা যাবেন না। কেননা তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ক্রিমিয়া দখল করেছে। তখন আমরা তাদের বললাম, আইপিইউ হচ্ছে এমন একটা সংগঠন, যেখানে সব উদ্বেগের বিষয় নিয়ে কথা বলার সুযোগ আছে। যেমন ইসরায়েল আর ফিলিস্তিনিরা কথা বলে না। তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। মধ্যপ্রাচ্যে পানি সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে আমরা একটা রাউন্ড টেবিল আলোচনার আয়োজন করি। ওই রাউন্ড টেবিলে দুই দেশের এমপিরা অংশ নেন। সুতরাং আইপিইউ এবং সংলাপ খুব নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এই সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু কী থাকতে পারে?

সাবের হোসেন চৌধুরী : একটা সাধারণ আলোচনা হবে। যাকে আমরা বলি জেনারেল ডিবেট। এবারের সাধারণ আলোচনার বিষয় ‘বৈষম্য বা ইনইকুয়েলিটি’।

এখানে একটা হচ্ছে দেশের ভিতরের বৈষম্য, অপরটি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৈষম্য। এ বৈষম্য কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার দশ নম্বর লক্ষ্য হচ্ছে এই ইনইকুয়েলিটি বা বৈষম্য। এ বৈষম্য অনেক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যেমন— সম্পদে বৈষম্য, আয়ে বৈষম্য, সুযোগে বৈষম্য, ক্ষমতা প্রয়োগে বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য প্রভৃতি। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ভারতের কৈলাস সত্যার্থী বৈষম্য বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন। পরে এ বিষয়ে পার্লামেন্টারিয়ানরা আলোচনায় অংশ নেবেন।

আলোচনার আরেক বিষয় হচ্ছে ইমার্জেন্সি আইটেম বা জরুরি বিষয়। সাম্প্রতিককালের যে কোনো ঘটনা নিয়ে কোনো এমপি আলোচনার প্রস্তাব তুলতে পারেন। পরে এটা নিয়ে ভোট হয়। এতে যে বিষয় গৃহীত হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। তা ছাড়া আইপিইউর চারটি স্থায়ী কমিটি আছে। সেই কমিটির কার্যক্রম চলবে। বিশেষভাবে আমাদের দুটো ফোরাম আছে। একটা নারী পার্লামেন্টারিয়ানদের এবং অন্যটা ইয়ং পার্লামেন্টারিয়ানদের নিয়ে। তারাও তাদের ফোরামে নানা বিষয়ে আলোচনা করতে পারবেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদ ও সহিংসতা একটা বড় উদ্বেগের বিষয়। এ বিষয়ে কী কোনো আলোচনা বা কোনো সিদ্ধান্ত হবে?

সাবের হোসেন চৌধুরী : অবশ্যই এ বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশেষ করে লন্ডনে হাউস অব কমন্সের সামনে যে ঘটনা ঘটল, সেটা তো আলোচনায় থাকবেই। আইপিইউতে নিয়মিত জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে সামরিক কায়দায় সমাধানের বিষয়টি আমরা বিশ্বাস করি না। জঙ্গিবাদের দিকে মানুষ কেন ঝুঁকে পড়ে, তার পারিবারিক, সামাজিক অবস্থান-সেসব বিষয় আমরা বোঝার চেষ্টা করি।

আরেকটি বিষয় আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, সেটা হচ্ছে আইন প্রণয়ন। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে কোনো আইন প্রণয়ন করতে হলে পার্লামেন্টের প্রয়োজন, অর্থ বরাদ্দ করতে হলে সেটা বাজেটের মাধ্যমে পার্লামেন্টের প্রয়োজন। এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।

তা ছাড়া পৃথিবীতে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, যেমন— জলবায়ু, শরণার্থী প্রভৃতি বিষয়ে আমরা কি বহুপাক্ষিক আলোচনা করব? নাকি একেকটা দেশ একেকটা বিষয়ে আলোচনায় সমাধানের চেষ্টা করবে? তবে আইপিইউ পারস্পরিক সহযোগিতা, মিথস্ক্রিয়ায় বিশ্বাস করে, যা জাতিসংঘ নীতিমালায়ও আছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় কোনো বিষয়ে আলোচনা হবে কি?

সাবের হোসেন চৌধুরী : অবশ্যই দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হবে। দেখা যাবে, চীন হয়তো তাদের কোনো বিষয় নিয়ে অন্য একটা দেশের সঙ্গে কথা বলছে। কিউবা হয়তো একটি বিষয় নিয়ে অপর একটি দেশের সঙ্গে বথা বলবে। এ ছাড়া পার্লামেন্টারি ডিপ্লোমেসি বা সংসদীয় কূটনীতি বলে একটা কথা আছে। দক্ষিণ আমেরিকায় কেবল ব্রাজিল আর মেক্সিকোতে আমাদের কূটনৈতিক মিশন আছে। ওই এলাকায় আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, পেরুসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ আছে। তাদের কারও সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমরা কিন্তু সংসদীয় কূটনীতির মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারি। এই সংসদীয় কূটনীতির বড় একটা সুযোগ করে দিচ্ছে এই সম্মেলন। আশা করি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এই সুযোগ পুরোমাত্রায় নেবে। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আইপিইউ প্রেসিডেন্ট পদে আপনার  নির্বাচন করার চিন্তা কীভাবে এলো?

সাবের হোসেন চৌধুরী : আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউই আইপিইউ প্রেসিডেন্ট হননি। সে বিষয়টা আমার মাথায় ছিল। তা ছাড়া সবারই একটা চেষ্টা থাকে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার। একটা প্রথা ছিল, আইপিইউর প্রেসিডেন্ট হন পার্লামেন্টের স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার। সেটাও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল আমার জন্য। যাই হোক, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া পার্লামেন্টের স্পিকার ছিলেন। তিনি অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। ৩০ বছর ধরে তিনি এমপি। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছি। এটা আমাদের জন্য একটা বড় অর্জন। এখানে আমার ব্যক্তিগত কিছু নেই। এটি বাংলাদেশের প্রতি, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বের সংসদীয় সম্প্রদায়ের বড় স্বীকৃতি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনাকে ধন্যবাদ

সাবের হোসেন চৌধুরী : আপনাকেও ধন্যবাদ।

সর্বশেষ খবর