বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভোট উৎসবের অপেক্ষায় কুমিল্লা

গোলাম রাব্বানী ও মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা থেকে

ভোট উৎসবের অপেক্ষায় কুমিল্লা

আঞ্জুম সুলতানা সীমা - মনিরুল হক সাক্কু

আজ রাত পোহালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক) ভোট গ্রহণ। টানা ভোট গ্রহণ চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বিশেষ নিরাপত্তায় ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হবে আজ। নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে সব প্রস্তুতি শেষ করছে। ভোট ঘিরে নগরজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটদানে প্রস্তুত ভোটাররাও। নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলীয় এই সিটি নির্বাচনে লড়াই হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর এবার কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে লড়াই হবে কাল বৃহস্পতিবারের ভোটে। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিজিবি-র‍্যাব-পুলিশের সদস্যরা। কেউ ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে অ্যাকশনে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী গত রাত ১২টা থেকে ভোটের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। ভোটারদের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রেও থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনো ভোটারকে কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার পথে কেউ বাধা দিলে বা ভয়ভীতি দেখালে, কিংবা শক্তি প্রদর্শন করলে তাৎখাক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ নির্বাচনে সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৩ হাজার ৮৩৬ জন সদস্য মাঠে থাকছেন। ভোট উপলক্ষে এ সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়র পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাসদ ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী— মোট চারজন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা, বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু, জাসদের (রব) শিরিন আকতার ও স্বতন্ত্র মেজর মামুনুর রশিদ (অব.)। এ ছাড়া সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪০ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। গতকাল নির্বাচনের শেষ প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দিনভর নগরীর অলিগলি চষে বেড়িয়েছেন তারা। দিনভর কুমিল্লা সিটি ছিল মিছিলের নগরী। অলিগলি, রাজপথ ছিল প্রচারণায় মুখর। অনেক প্রার্থী ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। অন্যদিকে সোমবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রচারণা শেষে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন। কেননা সোমবার মধ্যরাত থেকে বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে যারা কুমিল্লা সিটি এলাকার বাসিন্দা নন বা ভোটার নন, তাদের নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া প্রচারণার শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগও উঠেছে কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে। বিত্তশালী প্রার্থীরা ভোট কিনতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ধরনা দিচ্ছেন। নগদ অর্থ ছাড়াও ভোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে শাড়ি, লুঙ্গি, টিশার্ট, থ্রিপিসসহ বিভিন্ন উপহারসামগ্রী। অন্যদিকে নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ মাঠে নামছেন বিজিবি-র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যদিও গতকাল কুমিল্লা সিটি এলাকায় বিজিবির সদস্যরা পৌঁছেছেন। ইসি জানিয়েছে, গতকাল তারা এসেছেন। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে টহল শুরু করবেন।

সবার জন্য সমান সুযোগ : নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অভিযোগ করলেও তাদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে। ভোটের এক দিন আগে গতকাল কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব বলেন, ‘দুই দলই বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। কমিশনের মেসেজ ক্লিয়ার, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। দুই দলই চায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করব।’ নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে ইসির অবস্থান তুলে ধরে ইসি সচিব জানান, উভয় দলেরই কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো দেখা হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ, কুমিল্লায় আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৭ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করেছেন। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল গতকাল জানান, সোমবার রাত ১২টার পর থেকে বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল দিবাগত মধ্যরাত থেকে (ভোট শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে) ভোটের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সব ধরনের জনসভা, মিছিল, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ৩০ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে।

এক নজরে কুমিল্লা সিটি : ওয়ার্ড ২৭টি। ভোটার ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৭, মহিলা ১ লাখ ৫ হাজার ১১৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১০৩। ভোটকক্ষ ৬২৮। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ১ হাজার ৯৮৭ জন।

নিরাপত্তায় ৩ হাজার ৮৩৬ সদস্য : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নিরাপত্তায় ৩ হাজার ৮৩৬ সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিজিবি ২৪ প্লাটুন (৬০০ জন), র‍্যাব ২৭ টিম (৩২২ জন), পুলিশ ১ হাজার ৬৭৮ জন ও আনসার ১ হাজার ২৩৬ জন। সোমবার বিজিবির সদস্যরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় এসে পৌঁছান। গতকাল সকালে নির্বাচনী মাঠে টহল শুরু করেছেন তারা। এ নির্বাচনে সাধারণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২২ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে থাকছেন ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ২৭ ওয়ার্ডে থাকছেন ইসির ২৭ জন নিজস্ব পর্যবেক্ষক।

এদিকে নির্বাচনী মাঠে নামছেন নির্বাচন কমিশনের ২৭ জন ‘নীরব পর্যবেক্ষক’। ইসির নিজস্ব এসব কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রেখে নির্বাচনের সামগ্রিক পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন। ইসির কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে এসব পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। কোথাও অনিয়মের খবর পেলে তারা কমিশনকে জানাবেন এবং সেই তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ইসি।

যান চলাচলে কড়াকড়ি : নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী এলাকায় চার দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ভোটের পরদিন শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এ ছাড়া ভোটের আগের দিন, অর্থাৎ বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত অটোরিকশা, ইজিবাইক, টেম্পো, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস ও ট্রাক চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে নির্বাচনী এলাকায়। জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

সীমাকে জাতীয় পার্টির সমর্থন : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে সমর্থন জানিয়েছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)। গতকাল নগরীর বাইরে শহরতলীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাপার এ সমর্থনের কথা জানান, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এস. এম ফয়সাল চিশতী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাপার সভাপতি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন এমপি, দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা বেগম রওশন আরা মান্নান এমপি, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি ও কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ মো. ওমর ফারুক ও জাপার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কবির মোহন, যুগ্ম ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আবু জায়েদ আল মাহমুদ, মহানগর জাপার আহ্বায়ক মাহাবুবুল আলম সেলিম, বরুড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, জাপা নেতা রাশেদুল হাসেম ভূঁইয়া শামীম, মুশফিকুর রহমান মুকুল প্রমুখ। সভায় নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার প্রার্থী সীমাকে সমর্থন জানান।

শেষ প্রচারে ঘাম ঝরালেন প্রার্থীরা : অলি-গলি রাজপথ, সবখানেই ছিল নির্বাচনের প্রচারণা। রাত পোহালে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন। তাই গতকাল শেষ মুহূর্তে প্রচারণায় ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন ভোট প্রার্থনার জন্য। গতকাল শেষ প্রচারের দিন মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছিল কুমিল্লা সিটি। বিভিন্ন গানে গানে মাইকিংয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা।

ক্ষমতা দিয়ে নয়, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে চাই : সীমা : আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেছেন, জনগণের রায় মেনে নিতে আমি সব সময় প্রস্তুত ছিলাম, এখনো আছি। ক্ষমতা দিয়ে নয়, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে চাই। কুমিল্লায় যে পরিবেশ বিরাজ করছে, তা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। পরিবর্তন চায়। তারা পরিবর্তনের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন। আমি যেখানে গিয়েছি ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমি আমার পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছি। ৩০ তারিখ বোঝা যাবে সবাই আমাকে কতটুকু গ্রহণ করেছে। নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক এবং উন্নয়নের প্রতীক। আমার বিশ্বাস কুমিল্লার উন্নয়নের ৩০ মার্চ নৌকাকে মানুষ বেছে নেবেন। আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী নিজ এলাকা নগরীর ঠাকুরপাড়ায় শেষ প্রচারণা চালান ও ভোটারদের সমস্যার কথা শুনেন এবং নির্বাচিত হলে সমাধানের আশ্বাস দেন। এর আগে তিনি বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস কার্যালয়, গোবিন্দপুর, অশোকতলা, নুনাবাদ ও বিসিক এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি ওমর ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন, নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জামিল সেলিম ও ডা. আজম খান নোমানসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

শেষ মুহুর্তে বাহার : নির্বাচনী কমিশনের প্রতি সন্মান জানিয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতারা সিটি করপোরেশনের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। দলের গ্রুপিং বন্ধে তাদের এই অবস্থান। বিশেষ করে বিপক্ষের নেতাকর্মীরা ঠিকমতো মাঠে আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করছেন কেন্দ্রীয় টিম। গতকালও সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহারউদ্দীন বাহারের সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতা আলাউদ্দীন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। বাহার তাকে আশ্বস্ত করেছেন নৌকা ও নেত্রীর প্রতি সন্মান রাখবে তার কর্মী সমর্থকরা। তিনি সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন।

লোকজনকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে : সাক্কু : গতকাল শেষ প্রচারণায় সকালে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বাসায় বৈঠক করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। বাসায় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকার ক্ষমতায় আছেন, আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচন করেন। দেখান, সারা পৃথিবীর লোকজন দেখবে। তিনি বলেন, আমার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনের ওপরে আস্থা রাখছি। এ ছাড়া তিনি বিকালে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণায় বের হন। এ সময় বলেন, আমি পাঁচ বছর সামার্থ্য অনুযায়ী কাজ করেছি। সামার্থ্যের বাইরে কেউ যেতে পারে না। আমি চেষ্টা করেছি জনগণের সঙ্গে থাকতে। আমি বিগত দিনে সবার সুখ ও দুঃখে সঙ্গে ছিলাম। সেই বিবেচনায় আমাকে ভোট দেবে। বিকালে তিনি লাকসাম রোডের কাসেমূল উলুম মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় প্রচারণা চালান। পরে নগরীর রেসকোর্স এলাকায় একটি উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নেতা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুক, শফিউল আলম রায়হান, সারওয়ার জাহান দোলনসহ স্থানীয় নেতা-কর্মী।

নির্বাচনে নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে বিজিবি অঙ্গীকারবদ্ধ : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সদস্যরা বদ্ধপরিকর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর টাউন হলে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে বিজিবি কুমিল্লার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী মো. আহসানুজ্জামান এ কথা বলেন। বিজিবি সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কেন্দ্রে ও নগরীর গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজির সদস্যরা মঙ্গলবার থেকে টহল শুরু করেছে। তাদের এ টহল নির্বাচন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বজায় থাকবে। বিজিবির সদস্যদের টহল কার্যক্রম ও বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে নগরীর টাউন হল মাঠে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী মো. আহসানুজ্জামান গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগরীর ২৭টি কেন্দ্রে ও কেন্দ্রের আশপাশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২৭ প্লাটুন বিজিবি সদস্য টহলরত রয়েছে। এ সময় সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে আহসানুজ্জামান জানান, এখন পর্যন্ত পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বিজিবি বদ্ধপরিকর। বিজিবির প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন ১০ বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল সারোয়ার খন্দকার, সেক্টরের উপ-অধিনায়ক (অপারেশন) মেজর নাহিদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর