শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক প্রভাবেই দুর্নীতি হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক প্রভাবেই দুর্নীতি হচ্ছে

ইফতেখারুজ্জামান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ে সাধারণ জনগণের প্রশ্ন আছে। আমাদের দেশে দুর্নীতির প্রধান কারণ রাজনৈতিক প্রভাব। তিনি গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক আয়োজিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রয়াস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতা করছিলেন। চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, প্রধান তথ্য কমিশনার মো. গোলাম রহমান, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সিপিবির সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে সাধারণ জনগণ, সরকার, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মধ্যে ঐক্য দরকার। না হলে দুর্নীতির বিস্তার রোধ করা সম্ভব নয়। এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, বর্তমান সংসদ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দুর্নীতির পাগলা  ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা খুব কঠিন। সরকারি-বেসরকারি সব সেক্টরেই দুর্নীতির কমবেশি প্রকোপ রয়েছে। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের উচিত যেটা বিশ্বাস করি সেটা বলা। আমাদের দেশে অনেকে আছেন তিনি যা বিশ্বাস করেন তা বলেন না। যা বলেন তা বিশ্বাস করেন না তিনি। এ ধরনের মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন করাও কঠিন কাজ। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বর্তমান কমিশন ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রেরণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মো. গোলাম রহমান বলেন, বর্তমান সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাসী। এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, আমাদের উচিত দুর্নীতির পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা। অনেকে নিজে দুর্নীতি করে কিন্তু অন্যদের সৎ থাকতে বলে। এতে দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না। এ বিষয়ে সবাই ঐক্যদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে না তুললে কিছুই হবে না। চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, গত এক বছরে দুর্নীতির অভিযোগে অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। এতে কিছুটা হলেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কমিশনের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে ঘুষ চাওয়ার প্রবণতা কমেছে।

মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে চারটি সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেমন— রাজনৈতিক সদিচ্ছা; দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা; প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করা ও তরুণদের দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করা। আর এই চারটি কাজ করতে হবে সরকারকে। এ ছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের একার পক্ষে কাজ করাও সম্ভব নয়। এ জন্য সরকারকে তার নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করতে হবে। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দুদকের চলমান অভিযানের কারণে দুর্নীতি আগের চেয়ে কমেছে। দুর্নীতির প্রতিরোধ ব্যতিরেকে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। দুর্নীতি থামাতে প্রত্যেককেই দুর্নীতি ছাড়তে হবে। নিজের জায়গা  থেকে দুর্নীতি বন্ধে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে বুঝাতে হবে— দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না।

সর্বশেষ খবর