শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

অশ্রুজলে লে. কর্নেল আজাদকে বিদায়

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

অশ্রুজলে লে. কর্নেল আজাদকে বিদায়

সবাইকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিলেন র‌্যাবের গোয়েন্দা-প্রধান দুঃসাহসী সেনা কমান্ডো লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ। অশ্রুসিক্ত নয়নে এই দেশপ্রেমিক যোদ্ধাকে বিদায় জানালেন পরিবারের সদস্য, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরা। গতকাল জুমার নামাজের পর প্রথমে সেনা সদর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ,  পরে র‌্যাব সদর দফতরে জানাজা শেষে সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় সময়ের সাহসী এই যোদ্ধাকে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শেষবারের মতো গার্ড অব অনার দেওয়া হয় র‌্যাবের গোয়েন্দা-প্রধানকে। বিউগলে বেজে ওঠা করুণ সুরের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত সবার চোখ জলে ভিজে যায়। বাবার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে অঝরে কাঁদছিল বড় ছেলে আদনান ইশরাক জারিফ আর একমাত্র মেয়ে জেভা তাসমিয়া জারা। সেখানে তৈরি হয় এক মর্মস্পর্শী পরিবেশের। এর আগে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আজাদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘বোমার একটি স্প্লিন্টার চোখ দিয়ে ঢুকে ব্রেন ড্যামেজ করে ফেলে। আমরা মনে করছি, ওই স্প্লিন্টারের আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত শনিবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জঙ্গি আস্তানার কাছে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন আবুল কালাম আজাদ। বিস্ফোরিত বোমার স্প্লিন্টার তার বাঁ চোখের ভিতর ঢুকে যায়। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরদিন রবিবার রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে বুধবার রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় এনে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। গতকাল নামাজে জানাজার জন্য এই বীর সেনানীকে সেনা সদর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নিয়ে আসার পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদেরও হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায়। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও যেন অন্যরা হারিয়ে ফেলছিলেন। সহকর্মী আজাদকে হারিয়ে শিশুর মতো কাঁদছিলেন তারা। বলছিলেন, ‘আজাদের মতো এমন সহজ-সরল, সাহসী কর্মকর্তার বড়ই অভাব। ওর মতো মানুষ হয় না। বড় অসময়ে চলে গেলেন আমাদের আজাদ।’ সেনা সদর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে আজাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার শেষ কর্মস্থল র‌্যাব সদর দফতরে। বিকাল সোয়া ৩টায় ওই জানাজায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, এসবি-প্রধান জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমানসহ সামরিক-বেসামরিক অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। র‌্যাব সদর দফতরের জানাজা নামাজের পর লে. কর্নেল আজাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়ায় হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায় অনেককে। বেদনায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। জানাজার আগে এই প্যারা কমান্ডোকে র‌্যাবের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বনানী সামরিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় লে. কর্নেল আজাদকে। এ সময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শেষবারের মতো গার্ড অব অনার দেওয়া হয় র‌্যাবের গোয়েন্দা-প্রধানকে। বিউগলে বেজে ওঠা করুণ সুরের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত প্রায় সবার চোখ জলে ভিজে যায়। এ সময় সেনাবাহিনীর চৌকস এই কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্বামীর গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে দুই দফা গুরুতর অসুস্থ হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা শর্মী। সেই থেকে শর্মী অনেকটা অনুভূতিহীন হয়ে গেছেন বলে আশঙ্কা তার নিকটাত্মীয়দের। সামরিক কবরস্থানে বাবার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে অঝরে কাঁদতে থাকে দুঃসাহসী এই বীরের বড় ছেলে আদনান ইশরাক জারিফ ও মেয়ে জেভা তাসমিয়া জারা। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন একমাত্র চাচা ইউসুফ হাসান হিমেল। সেখানেই তৈরি হয় হৃদয়বিদারক পরিবেশের। নিজেকে কিছুটা সামলিয়ে হিমেল বলেন, ‘আমার ভাইয়ের তিনটি সন্তান। নাবালক এই তিন শিশুকে নিয়ে এখন কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। জারিফ তবুও কিছুটা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু জারা ও জারির কিছুই বোঝে না। ওরা বুঝতে পারছে না ওদের বাবাকে আর কখনো দেখা যাবে না। ছোট ছেলে জারির বয়স এখন দুই বছর তিন মাস।

সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করার পর তার কবরে সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল (এজি) মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। পরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এই দুঃসাহসী বীরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

বোমার স্প্লিন্টারেই মৃত্যু : বোমার স্প্লিন্টার মস্তিষ্কে ঢুকে যাওয়ায় র‌্যাবের গোয়েন্দা-প্রধান লে. কর্নেল আজাদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজাদের লাশের ময়নাতদন্তের পর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বোমার একটি স্প্লিন্টার চোখ দিয়ে ঢুকে ব্রেন ড্যামেজ করে ফেলে। আমরা মনে করছি, ওই স্প্লিন্টারের আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

মাতৃভক্ত আজাদ : অফিসের কাজ শেষে প্রায় প্রতিরাতেই মিরপুরে মা সায়দা করিমের কাছে ছুটে যেতেন র‌্যাবের এই গোয়েন্দা-প্রধান। মায়ের সঙ্গে একান্তে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের বাসায় ফিরতেন তিনি। মিরপুর-২ নম্বর বসতি হাউজিংয়ের ওই বাড়িতে একমাত্র ছোট ভাই ইউসুফ হাসানের সঙ্গে থাকেন মা। অফিসে কাজের ব্যস্ততার মাঝেও মায়ের সঙ্গে কথা বলতে ভুলতেন না আজাদ। নিজে কমান্ডো হলেও মায়ের কাছে তার মন পড়ে থাকত বলে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

আগারগাঁও তালতলা শতদল ভবন এবং ডি টাইপ কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মায়ের প্রতি আজাদের ভালোবাসার কথা। এক বাসিন্দা শাহ হান্নান মাহবুব (পল্লব) তো বলেই ফেললেন, ‘আমি বায়েজিদ বোস্তামীকে (রহ.) দেখি না। তবে রাসেল ভাই আমার দেখা এ কালের বায়েজিদ বোস্তামী।’ ছোটবেলা থেকেই মায়ের প্রতি তার ভালোবাসার কথা কলোনির সবাই জানতেন।’

ফুটবলার থেকে সেনা কমান্ডো : ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার খেলা দেখেই ফুটবলের দিকে ঝুঁকে পড়েন লে. কর্নেল আজাদ। সেই ছোট বয়সেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে থাকেন। ছোট বয়সেই তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। আগারগাঁও কলোনির স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সময় প্রয়াত বাবা রেজাউল করিমের কাছে বায়না ধরেন বিকেএসপিতে ভর্তি হবেন। সেখানে ফুটবলে নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটাবেন। বাবাও আদরের সন্তানের সাধ অপূর্ণ রাখেননি। তবে বিধিবাম তিনি ফুটবল ইউনিটে ভর্তি হতে পারেননি। চান্স পান ক্রিকেট বিভাগে। বিকেএসপির ক্রিকেট ফার্স্ট ব্যাচের ছাত্র হিসেবে শুরু হয় তার বিকেএসপি জীবন। তবে ক্রিকেটের ছাত্র হলেও লুকিয়ে লুকিয়ে ফুটবল খেলতেন সবার প্রিয় রাসেল। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় তার সহপাঠী। তৎকালীন বিকেএসপির মহাপরিচালক কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফের উৎসাহে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। তবে এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়ে চার দিন ক্লাসও করেছিলেন। বিকেএসপির সহপাঠী বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম প্রয়াত লে. কর্নেল আজাদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, রাসেল সেনাবাহিনীতে জয়েন না করলে জাতীয় ক্রিকেট টিমে অবশ্যই খেলত। গতকাল সামরিক কবরস্থানে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন বিকেএসপির সাবেক মহাপরিচালক কর্নেল (অব.) লতিফ। এ প্রতিবেদককে বলেন, ওর মতো ব্রিলিয়ান্ট অ্যান্ড লয়াল অফিসার খুব কমই দেখেছি আমি। একজন ভালো ক্রিকেটারও ছিল সে। আমিই ওদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশ সেবার জন্য উৎসাহ দিতাম। আজাদ একজন কমান্ডো যোদ্ধা, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়েই ওর মৃত্যু হয়েছে। তবে ওদের মৃত্যু নেই। লে. কর্নেল আজাদের জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। ৩৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি  কোর্সে ১৯৯৬ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন পান তিনি। এরপর আজাদ ৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের আইও, অ্যাডজুটেন্ট এবং কোয়ার্টার মাস্টারসহ নানা দায়িত্ব পালন করেন। সেনা কমান্ডো আজাদ সেনা সদর, ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন এবং ১৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর র‌্যাব-১২ এর একজন  কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে এই বাহিনীতে আসেন তিনি। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আজাদকে ওই বছর শেষেই র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ে নেওয়া হয়। দুই বছর উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক হন। দুই ছেলে এক মেয়ে সন্তানের জনক লে. কর্নেল আজাদ। গত বছর রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় প্যারা কমান্ডোদের অপারেশন থান্ডারবোল্টেও এই কমান্ডোর বিশেষ ভূমিকা ছিল। এর আগে জঙ্গিবাদ এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকার জন্য বিপিএম (বাংলাদেশ পুলিশ পদক) এবং পিপিএম (প্রেসিডেন্ট পদক) পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

যেভাবে সিলেটে : রাজধানীর আশকোনায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে পুলিশ চেকপোস্টে বোমা বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত হওয়ার পর সারা রাত দেশের বিভিন্ন এলাকায় র‌্যাবের অভিযান সমন্বয় করেন তিনি। সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানে ছুটে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখান লে. কর্নেল আজাদ। তার সহকর্মীরা বলছিলেন, নিজে কমান্ডো হওয়ার কারণেই সিলেটে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করছিলেন তিনি। র‌্যাবের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই তাড়াহুড়ো করে সিলেটে যাওয়ার বিমান টিকিট সংগ্রহ করান তিনি। জুনিয়র সহকর্মী মেজর আজাদকে নিয়ে ছুটে যান সিলেটের আতিয়া মহলের অভিযানে। জঙ্গিবাদ দমনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনান অভিযানের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র এবং পরিচিত সহযোদ্ধা কমান্ডোদের। সারা দিন সেখানে অবস্থান শেষে রাতেই তার ঢাকায় ফিরে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী ঘটনাস্থল ত্যাগ করার প্রস্তুতিও নেন তিনি এবং তার অধঃস্তন মেজর আজাদ। গাড়িতে ওঠার সময়ই লে. কর্নেল আজাদের চোখ পড়ে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক চৌধুরী আবু মোহাম্মদ কয়সর এবং জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলামের তল্লাশির দৃশ্যে। এ সময় তাদের ডেকে বলছিলেন, এভাবে তল্লাশি করা ঠিক নয়। প্রশিক্ষিত বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সহায়তা নেওয়ার জন্য বলেন তিনি। তার মুখের কথা শেষ না হতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দুই পুলিশ পরিদর্শক, লে. কর্নেল আজাদ, মেজর আজাদসহ অন্তত ১০ জন। একটি স্প্লিন্টার তার চোখ দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। গুরুতর অবস্থায় তাদের নেওয়া হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এই দুই সেনা কর্মকর্তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হয়। পরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে।

লে. কর্নেল আজাদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল এমপি, ট্রুথ পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম হাবিব দুলাল ও মহাসচিব এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর