শিরোনাম
শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিশ্লেষকদের মত

প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ইসি

গোলাম রাব্বানী

নতুন নির্বাচন কমিশন প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করতে পারায় সবার আস্থা অর্জনের পথে একধাপ এগিয়েছে। এজন্য কুমিল্লা নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্লেষকরা বলেছেন, রাজনৈতিক দলের সমালোচনার মুখে নতুন ইসির আন্তরিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় ‘ভালো’ নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। এতে নতুন ইসির ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের কাজ করেছে। সুন্দরভাবে নির্বাচন করেছে। আর নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বলছে, কুমিল্লা ভোটের মাধ্যমে কমিশনের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখে জনমনে আস্থা বাড়বে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোরও কমিশনের প্রতি আস্থা রাখতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রধানরা।

এদিকে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ নির্বাচনের দিকে সবার নজর ছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও বলছেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে তাদের সব ধরনের পদক্ষেপ ছিল। কুমিল্লার ভোটের মাধ্যমে সবার আস্থা অর্জনে শতভাগ সফল হয়েছেন তারা। ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর কুমিল্লায় প্রথম বড় নির্বাচন করল নতুন ইসি। ১৫ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব নেন। ইতিমধ্যে একটি উপ-নির্বাচন, স্থানীয় সরকারের ১৮টি নির্বাচন হয়েছে। এ ভোট নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করছিল। সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, নিরপেক্ষতা দেখাতে গিয়ে ইসি ক্ষমতাসীনদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন দল আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে এবং এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। তবে নির্বাচন কমিশন বলেছে, তাদের কাছে দুই দলই সমান। সবার জন্য সমান সুযোগ   তৈরি করা হয়েছে। সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, যেখানে বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা করা হয়েছে সেখানেই কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া সফলভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর মোর্চা ইডব্লিউজি পরিচালক আবদুল আলীম গণমাধ্যমকে বলেন, দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। নতুন কমিশন যে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে সদিচ্ছা দেখিয়েছে তা প্রতিফলিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আস্থা অর্জনের পথে একটি অগ্রগতি বলতে হবে। তিনি জানান, ভোটে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ বাড়ায় বিশৃঙ্খলা তৈরিতেও অনেকের সংশ্লিষ্টতা থাকে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কঠোর নির্দেশনাও কাজে লেগেছে। সিইসি কুমিল্লায় গিয়ে ‘গণতন্ত্রের নবযাত্রা ’ শুরুর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার কথা আরও অর্থবহ হয়েছে ভোটের পরে। ভোটের আগে-পরে ঢালাও অভিযোগ বা সমালোচনা করে বিভ্রান্ত করা ঠিক হবে না। সব সময় সমালোচনার সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সবাইকে ইসিকে সাহায্য করতে হবে। জানিপপ চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নতুন ইসির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। এ ধরনের সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে বর্তমান ইসি মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ নির্বাচনে সবার নজর ছিল। ইসির সদিচ্ছা থাকলে যে কোনো সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যে সম্ভব—তা কুমিল্লায় প্রমাণ হয়েছে। মেয়র পদে মনিরুল হক সাক্কু আবারও জিতেছেন। প্রায় ১১ হাজার ভোটে তিনি হারিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে।

সর্বশেষ খবর