শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

কী চমক অপেক্ষা করছে দিল্লিতে

বৈঠকে থাকবেন মমতা, নতুন উচ্চতায় আসীন হবে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক

বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি থেকে

কী চমক অপেক্ষা করছে দিল্লিতে

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত নায়াদিল্লি। দিল্লির রাজপথ দুই দেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। সাউথ ব্লক সব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের মধ্য দিয়ে আরও সুদৃঢ় হবে। নতুন উচ্চতায় আসীন হবে এই সেতুবন্ধ।

এদিকে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মততা ব্যানার্জি আসছেন দিল্লি সফরে। ভারতের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণকে উপেক্ষা করবেন না মমতা। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার এ সফরে চমকও থাকতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিব মলয় কুমার দে গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নৃপেন মিশ্রর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মুখ্য সচিব তার কাছে জানতে চেয়েছেন, তিস্তা নিয়ে রাষ্ট্রের সমস্যা কী আছে। জানা গেছে, ঢাকা-দিল্লির কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক তাৎপর্য ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুই বছরের মধ্যে দুই দেশেই নির্বাচন। বিশেষ করে বিজেপির সমর্থন অব্যাহতভাবে পেতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল দিল্লির একজন বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ পিনাক রঞ্জন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, বন্ধুত্বে কোনোভাবেই ফাটল ধরবে না। দুই পক্ষই নিজ নিজ স্বার্থ সংরক্ষণ করে সম্পর্ক এগিয়ে নেবে।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর নিজ অফিসে বসে আলাপকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল নয়। অনেক বিষয় এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। দিল্লি তার সৌহার্দ্যের বন্ধন অব্যাহত রাখবে। তবে ভারতের সাংবাদিক জয়ন্ত রায় চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য আশার আলো থাকবে। কারণ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খালি হাতে না ফেরাতে। এদিকে দিল্লিতে বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল গত দুই দিন সাউথ ব্লক ও শাস্ত্রী ভবনে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ডেস্কের দায়িত্বরত সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর মধ্যে ভারতের রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, বিদ্যুত্মন্ত্রী পিউস গয়াল ছাড়াও রয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ড. এস জয়শঙ্কর, যুগ্ম-সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার ডেস্ক) শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথানসহ অনেকে ছিলেন। সবাই বলছেন, সমঝোতা স্মারকসহ সবকিছুই প্রস্তুত। তিস্তার ব্যাপারে আশার আলো দেখাননি তারা। তবে দিল্লির সাংবাদিকরা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কী চমক রয়েছে, আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোন ট্রাম্পকার্ড দেখাবেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মততাই বা কী চমক দেখাবেন, সেদিকে তাকিয়ে ঢাকা-দিল্লির কূটনীতিকরা। তারা আশার আলোই জ্বালতে চান। এদিকে এম জে আকবর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আরও বলেছেন, ঢাকা থেকে প্রথমবারের মতো শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল দিল্লি আসছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায় দিল্লি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ঢাকা-দিল্লির মধ্যে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন সেতুবন্ধ রচিত হবে। দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনাকে ব্যাপক সংবর্ধনা দেওয়া হবে, সেভাবেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের রাষ্ট্রপতি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কোন সিদ্ধান্তে যাবেন, কোন পরিক্রমা তৈরি করবেন, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই দিন।

সর্বশেষ খবর