শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমি মমতাকে বুঝিয়ে বলব

বাংলাদেশ প্রতিদিনের দিল্লি প্রতিনিধিকে শেখ হাসিনা

আমি মমতাকে বুঝিয়ে বলব

মমতা ব্যানার্জি

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন প্রশ্নে উদ্ভূত জটিলতা মোচনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চলতি সফরকালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে পৃথকভাবে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে চাইছেন। তিনি গতকাল এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন। মমতা ব্যানার্জির বিমান গতকাল নয়াদিল্লির টারমাক ছোঁয়ার ঠিক আগে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এসে পৌঁছান চাণক্যপুরীতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক অনুষ্ঠানে। সেখানেই একান্তভাবে কিছুক্ষণ কথা বলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে অল্পক্ষণের মধ্যেই দিল্লি পৌঁছাবেন এই তথ্য তাকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই শেখ হাসিনা পাল্টা জানতে চান ঠিক কটার ফ্লাইটে আসছেন মমতা। সময় বলার পর জানতে চাই, কী বার্তা মমতাকে দিতে চান তিনি। তত্ক্ষণাৎ মুজিবকন্যার জবাব, ‘মমতার জন্য সব সময়ই শুভেচ্ছা রয়েছে। তবে এবার আমি তার সঙ্গে আলাদা বসতে চাই। কথা বলতে চাই। শনিবার রাতে চেষ্টা করব তার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করার।’ তিস্তা নিয়ে কী বলবেন মমতাকে? কতটা আশাবাদী আপনি? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জবাব, ‘আমি সব সময়ই আশাবাদী। এবারে তো মমতাও আসছেন। দেখা যাক কী হয়। আমি যতটা সম্ভব এ নিয়ে তাকে বুঝিয়ে বলব।’

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, আজ সন্ধ্যায় মমতা অথবা শেখ হাসিনা কারোরই কোনো পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি নেই। হায়দরাবাদ হাউসে আজ নরেন্দ্র মোদির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে মমতা ও হাসিনা দুজনই উপস্থিত থাকছেন। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে ঘরোয়া নৈশাহার করার কথা রয়েছে হাসিনার। আবার সোমবার রাতে যে বিশেষ ভোজসভার আয়োজন করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে, সেখানেও উপস্থিত থাকবেন মমতা। গতকাল শেখ হাসিনার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, শুধু রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি অথবা ভারতীয় নেতৃত্বের ওপর তিস্তা-সমাধান ছেড়ে না দিয়ে, তিনি নিজে আলাদা করে আসরে নামতে চাইছেন। সাত বছর আগে হাসিনা যখন ভারত সফরে এসেছিলেন তখনো মমতা এসেছিলেন হোটেলে দেখা করতে। কিন্তু সেই সাক্ষাৎকার ছিল নেহাতই ঘরোয়া। এবারে কিন্তু আসার আগেই রাজনৈতিক হোমওয়ার্ক সেরে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এর আগে মমতার সঙ্গে দৌত্যের প্রশ্নে যে ভুল বাংলাদেশ এবং ভারত বার বার করেছে, আর তা করতে চান না শেখ হাসিনা। পাঁচ বছর আগে কলকাতায় গিয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশের তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। মমতার অনড় অবস্থান দেখে তিনি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। পরিণামে শেখ হাসিনা অসন্তুষ্ট হন, দীপু মনি হন মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারিত। অন্যদিকে আরও কঠিন হয়ে যায় মমতার তিস্তা নিয়ে মনোভাব। এবারের সফরে মমতার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত রসায়নকেই যে সামনে নিয়ে আসতে চাইছেন শেখ হাসিনা, তা স্পষ্ট হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর