মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মমতার প্রস্তাব আমলে নেয়নি সরকার : ইনু

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তিস্তায় পানি নেই দাবি করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন, বাংলাদেশ তা আমলে নেয়নি। আমলে নেওয়ার দরকার নেই। তিস্তা তিস্তাই, তিস্তার পানি বণ্টন করার জন্য আরেকটি নদীর কোথায় কি হবে সেটা এখানে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না।

গতকাল দুপুরে তথ্য অধিদফতরে সম্মেলনকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার এবং সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার (প্রেস) আকতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, মমতা ব্যানার্জি কয়েকটি ছোট নদীর পানি বণ্টনের কথা বলেছেন। সেটা আমরা আমলে নেইনি। তথ্যমন্ত্রী ভারতের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ কখনোই বলেনি যে, তার রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য চুক্তি ঝুলে আছে। এটা তারা তাদের মতো আলোচনা করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে চুক্তি করা এবং সে ব্যাপারে মোদি সাহেব এই তিস্তা চুক্তি করবেন সেটাই যুক্ত ঘোষণায় এসেছে। সুতরাং তিস্তা চুক্তি করব না— যদি এ ধরনের শব্দ থাকত তাহলে আমরা ধরতাম পিছিয়ে গেলাম। এইবার তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি, তবে এই চুক্তি করার পক্ষে দুই পক্ষই একমত। যেহেতু ঐকমত্য আছে সেটা সময়ের ব্যাপার, এই সময়টা নিয়ে আমাদের তর্ক-বিতর্ক আছে। তবে এবার হলে আমরা খুশি হতাম।

হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও শেখ হাসিনা এই চুক্তির দাবি থেকে সরে আসেননি। বরং তিনি তিস্তার পানির দাবি আরও জোরালোভাবে তুলে ধরেন এবং একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির প্রবাহ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানও জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের মধ্যে ২২টির তথ্য তুলে ধরেন। একই সঙ্গে বলেন, অন্যগুলোর বিষয়েও জানানো হবে, লুকোছাপার কিছু নেই। তিনি বলেন, চুক্তি সম্পাদনের পরে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়। রাষ্ট্রপতি এটি সংসদে উত্থাপনের ব্যবস্থা করে দেন। সুতরাং চুক্তির আগে সরকারকে সংসদে বা জনগণের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে সেই প্র্যাকটিস নেই। খালেদা জিয়ার সরকারও কোনো দিন করেনি, পৃথিবীর কোনো সরকার করে না। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে খালেদা জিয়া ঢালাও বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে তিনি চুক্তির বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত নন, এমনকি চুক্তির শিরোনামগুলোও পড়ে দেখেননি। কোন চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হলো বা কোন চুক্তিতে দেশ বিক্রি হলো তাও স্পষ্ট করতে পারেননি।

তথ্যমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, কোন চুক্তিটি দেশের স্বার্থবিরোধী? কোনটিতে দেশ বিক্রি হয়েছে? কোনটিতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন্ন হয়েছে? কোনটিতে বাংলাদেশ তার ভূমির ওপর এক সেন্টিমিটার সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে? আমি আশা করি, বিএনপি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে কোনটিতে দেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়েছে তা উল্লেখ করবে। এটা না করতে পারলে খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে তিনটি চুক্তি হয়েছে। চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে ১০টি চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সামরিক সরঞ্জাম চীন থেকে কেনে। ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় আমাদের ক্রয়কে আরও বহুমুখী ও প্রতিযোগিতামূলক করা এবং নির্দিষ্ট নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার একটি পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর মান বৃদ্ধি পাবে, যুগোপযোগী চাহিদা পূরণ সহজ হবে ও জাতিসংঘ শাস্তিরক্ষা মিশনে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে।

 

সর্বশেষ খবর