মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছাত্রলীগের গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত আশুলিয়া রণক্ষেত্র

সাভার প্রতিনিধি

ছাত্রলীগ কর্মীর গুলিবর্ষণে সিটি ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র নিহত এবং সাত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওযার ঘটনা নিয়ে আশুলিয়া গতকাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুপুরে খাগান এলাকার সিটি ইউনিভার্সিটির সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। জানা গেছে, ছাত্রলীগ কর্মীর বিক্ষিপ্ত গুলিবর্ষণের ঘটনায় সিটি ইউনিভার্সিটির সিফাত (২২) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও সাত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০ জন। নিহত শিক্ষার্থী সিটি ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বাসুদেব নামের এক শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভাঙচুরের খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। এরা হলেন সোহেল (২২), মোশারফ হোসেন (২৪)। ঘটনার ব্যাপারে সিটি ইউনিভার্সিটির আলমাস হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাসে সিনিয়র ‘বড় ভাইদের’ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রবিবার দুপুরে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সায়েদ ও বাপ্পীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি শিক্ষার্থীরা নিজেরাই মীমাংসা করে নেন। কিন্তু গতকাল দুপুরে ক্যাম্পাসের সামনে একটি হোটেলে ওই ঘটনা নিয়ে আবারও মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় পাপ্পীর পক্ষে আশুলিয়ার সদর ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা শাওন ২০টি মোটরসাইকেল যোগে প্রায় ৪০-৪৫ জন অনুসারী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। এতে ৮ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে টেক্সটাইল বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র সিফাত হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  এদিকে গুলির শব্দ শুনে সিটি ইউনিভার্সিটির অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা ছাত্রলীগের দুই কর্মী ও দুটি মোটরসাইকেল আটক করেন। পাশাপাশি সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাস থেকে অন্য শিক্ষার্থীরা বের হয়ে সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করেন। তারা খাগান বাজার এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানপাটও ভাঙচুর করেন। বিক্ষুব্ধরা আটকে রাখা মোটরসাইকেল দুটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা চারাবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে আরও কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তারা এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হওয়া দুজনকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের (ওসি) আবদুল আওয়াল বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বহিরাগতদের মধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসের পাশের বিভিন্ন ভবনের সিসিটিভি থেকে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর