শিরোনাম
বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজন হত্যায় চার জনের ফাঁসি বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল, জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল। এ ছাড়া কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীকে নিম্ন আদালতের দেওয়া এক বছর করে কারাদণ্ড বহাল রয়েছে। তবে ঘটনার ভিডিও ধারণকারী, নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত নূর মিয়াকে সাজা কমিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের সাজাই হাই কোর্টে বহাল রয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার করে টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ ও ৩ জনের খালাসও বহাল রয়েছে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাজনের বাবা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি। আসামিদের ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই। গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।’ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, রাজন হত্যার মতো ঘটনা সমাজে যেন আর না ঘটে, কেউ যেন আর নিজেদের হাতে আইন তুলে না নেয়, সেজন্য মৌলিক আইনের প্রতি সমাজে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকেই যেন আইন বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি। আদালত বলেছে, আইন সম্পর্কে সমাজের অনেকেরই মৌলিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তাই অনেকেই আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা করতে মিডিয়াসহ সব ধর্মীয় নেতা ও ধর্ম প্রচারককে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকেই মৌলিক আইন সম্পর্কে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন, মো. শাহরিয়ার ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া পলাতক দুই আসামির পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেটে সামিউল আলম রাজনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় একই বছরের ৮ নভেম্বর প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেয় সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলা হাই কোর্টে আসে। এ ছাড়া আসামিরা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল ও জেল আপিল করেন। গত ৩০ জানুয়ারি হাই কোর্টে এ মামলার ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ১২ মার্চ রায়ের দিন ধার্য হয়।

 

সর্বশেষ খবর