বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আশা পূরণ হয়নি মানুষের : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশের মানুষের ‘আশা পূরণ হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের   মানুষ যা চেয়েছিল, প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ যে নদীর ওপর নির্ভর করে কোটির ওপরের বেশি মানুষের জীবন চলে সেই নদীর পানির একটা চুক্তি হবে। দুঃখজনক হলো তা হয়নি। হয়নি শুধু নয়, প্রধানমন্ত্রী নিজেই তার সফরের ফলাফল সম্পর্কে বলেছেন, ‘ম্যায় পানি মাঙ্গা, মুচকো বিদ্যুৎ মিলা গা। কুচ তো মিলা।’ গতকাল দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমার দেশ’ পত্রিকা বন্ধের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি আবদুল হাই শিকদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কবি ফরহাদ মজহার, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ইলিয়াস খান, কাদের গনি চৌধুরী, আবদুস শহীদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিএনপি নেতাদের মধ্যে সেলিমা রহমান, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শামীমুর রহমান শামীম, অঙ্গসংগঠনের সাইফুল ইসলাম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি নিজেই বলেছেন, মেলেনি, কোনোটাই মেলেনি, শুধু কুচ মিলেছে। সেটা বিদ্যুতের কথা বলেছেন তাও আবার পয়সা দিয়ে কিনতে হবে। উনি নিজেই বলে দিয়েছেন, আমাদের আর কিছু বলার আছে বলে আমি মনে করি না। আবার সরকার বলছে, দুই দেশের সম্পর্ক উচ্চতর পর্যায়ে।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে, তারা আদায় করতে পারবে না। ফারাক্কা ব্যারাজ নিয়ে এই একই অবস্থা চলছিল। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেটা জাতিসংঘে তুলেছিলেন, পরে বাধ্য হয়ে ভারত একটা চুক্তি করেছিল।’

সরকার দেশকে একদলীয় শাসনে নিয়ে গেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৭৫ সালে যে কাজটি করেছিল, সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে চারটি পত্রিকা রেখেছিল। সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়ে একদলীয় শাসনের মতো ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জায়গা থেকে তারা (আওয়ামী লীগ) তো সরেনি, শুধু তার কৌশলটা পাল্টিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি একটু ভিন্ন।

সুতরাং ভিন্ন কৌশলে, ভিন্ন আঙিকে নতুন পোশাক পরিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থাই করার জন্য সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে চলেছে। এরই ফলে আমরা দেখছি, একটা একটা করে পত্রিকা-চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেগুলোই তাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট সত্য কথা বলতে পেরেছে।’ অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাহমুদুর রহমানের ভূমিকার প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অন্যতম একজন প্রধান ব্যক্তি যিনি সরকারের ষড়যন্ত্রের কাছে আপস করেননি। দলের নেতা-কর্মীদের গুম-মিথ্যা মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা নিজের এলাকায় থাকতে পারেন না, অন্য এলাকায় থাকেন। পুলিশ প্রতিদিন হয়রানি করছে, হয় টাকা নিচ্ছে নতুবা কারাগারে পাঠাচ্ছে। এখন নতুন অস্ত্র বের করেছে জঙ্গি। এখন যার কাছ থেকে টাকা পাবে না, তাকে জঙ্গির কথা বলে গ্রেফতার করে আটকে রাখবে। বাংলাদেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি শুরু হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর