শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মন্ত্রীদের পদে থাকার অধিকার নেই

------ কাজী ফিরোজ রশীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রীদের পদে থাকার অধিকার নেই

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক দিন আগেই দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর  রহমানের কন্যা। যা কিছু করব ভেবেচিন্তেই করব। আমার ওপর আস্থা রাখুন। আমি থাকতে দেশের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু দেখা গেল এক দিন পরই তিনজন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখলেন না। তারা সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন। তাদের স্বপদে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘কওমি শিক্ষার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণকারীরাও অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবে। তারাও মানুষ। তাদের অধিকারও দেখতে হবে। দীর্ঘদিন পর এ স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পেছন থেকে টেনে সামনের দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনজন মন্ত্রী বিষোদ্গার করেছেন। তাদের স্বপদে থাকার কোনো অধিকার নেই। নিজেদের গণ্ডির বাইরে গিয়ে সরকারকে আক্রমণ করেছেন তারা।’

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এক মন্ত্রী বললেন, গণতান্ত্রিক চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমি মনে করি, এতে গণতান্ত্রিক চেতনা আরও শক্তিশালী হবে। সারা দেশে ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। কওমি মাদ্রাসায় অনেক ছাত্র পড়াশোনা করে। তাদের একটি সরকারি সনদ দেওয়া জরুরি ছিল। প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব পালন করেছেন। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্যই তিনি এটা করেছেন। এতে গণতন্ত্র নষ্ট হবে না। আল্লামা শফীকে এক মন্ত্রী তেঁতুল হুজুর বলেন। বাস্তবতা হলো, তিনি সর্বজনশ্রদ্ধেয়। তাকে যেভাবে কটাক্ষ করে তেঁতুল হুজুর বলা হয় এবং এটাকে যেভাবে উসকে দেওয়া হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। পয়লা বৈশাখ পালনে তো কোনো বাধা নেই। দিনের বেলা এটা করতেই পারে। তবে যেসব ঘটনা ঘটছে, তা নিয়েও ভাবতে হবে।’ জাপার এই নেতা বলেন, ‘এ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। আপনি হিন্দু হলে সেই ধর্ম পালন করুন। মুসলমান হলে ইসলাম পালন করুন। খ্রিস্টান হলে সেই ধর্ম পালন করুন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলেম-ওলামারা দেখা করলেই বলা হয় সাম্প্রদায়িকতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলেম-ওলামারা দেখা করতে পারবেন না কেন? তিনি কি ১৬ কোটি মানুষের নেতা নন? তারা যে মোমবাতি জ্বালিয়ে জাগরণমঞ্চ করেন, পুলিশ পাহারায় এমনটা করা যায়? তাদের যখন জাগরণ শেষ হয় তখন পুলিশ-র‌্যাব দিয়ে পাহারা দিতে হয়। নইলে তারা পাঁচ মিনিটও থাকতে পারবে না। এসব জাগরণ দিয়ে সরকার চলতে পারে না। সরকার চলবে ১৬ কোটি মানুষের আস্থা নিয়ে। আমি মনে করি, এই গুটিকয় বাদে ১৬ কোটি মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষেই সম্ভব।’

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখার পরও তারা কেমনে বলেন, দেশ গেল! তাদের মন্ত্রী পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাদের এখান থেকে সরে যেতে হবে। নইলে জনগণই তাদের সরিয়ে দিতে বাধ্য হবে।’

সর্বশেষ খবর