রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আবারও পদ হারানোর আশঙ্কায় মান্নান

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

আবারও পদ হারানোর আশঙ্কায় মান্নান

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এম এ মান্নান বলেছেন, জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত সব সময়ই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। বরখাস্ত করে কখনো উন্নয়ন হয় না। গাজীপুর নগর ভবনের বর্তমান এবং তার বরখাস্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল মেয়র এসব কথা বলেন। এদিকে মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট। অধ্যাপক এম এ মান্নানের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। অধ্যাপক এম এ মান্নানের নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, হাই কোর্টের দেওয়া আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র এম এ মান্নানের দায়িত্ব ফিরে পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই। তিনি জানান, হাই কোর্টের আদেশের সার্টিফাইয়েড কপি হাতে পেলেই মান্নান তা নিয়ে মেয়র পদে বসে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তবে যদি সরকারপক্ষ আপিল করে সে ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এদিকে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত হলেও আতঙ্ক কাটেনি মেয়র এম এ মান্নানের। তিনি মনে করেন, সরকারের মধ্যে একটি পক্ষ তিনি মেয়র পদে বসে কার্যক্রম পরিচালনা করেন তা চায় না। তাই বারবার কোনো না কোনো মামলায় জড়িয়ে তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। তিনি এ সরকারের দমন-পীড়নমূলক রাজনীতির বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দুই দফা তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখনো তার আশঙ্কা, এবার নগর ভবনের দায়িত্ব পেলে হয়তো আবারও কোনো মামলায় জড়িয়ে তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হবে। উল্লেখ্য, যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নেতা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মেয়র মান্নানকে ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম দফায় সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সেই বরখাস্তের আদেশ ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল হাই কোর্ট স্থগিত করে। ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের আদেশ বহাল থাকে। এরপর দায়িত্বে ফেরার আগেই ওই বছরের ১৫ এপ্রিল অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ফের গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ১৮ এপ্রিল তাকে দ্বিতীয় দফায় সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মান্নান উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।

পরে তিনি দ্বিতীয় দফায় বরখাস্তের আদেশ স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন। অধ্যাপক এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ২৯টি মামলা করা হলেও সবকটিতে তিনি জামিন পেয়ে এ বছরের ৬ জানুয়ারি ফের কারামুক্ত হন। এসব মামলার প্রায় সবগুলোই বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধাদান, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন আইনে করা হয়েছে। অধ্যাপক মান্নানের অবর্তমানে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বশেষ খবর