সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাল নোটে আতঙ্ক

শাস্তির আওতায় আসছে দায়ী ব্যাংক ও ব্যাংকার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

জাল নোট সরবরাহ থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ আইনে কোনো ব্যাংকের কাউন্টার থেকে জাল নোট সরবরাহের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও দায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। উপরন্তু প্রস্তাবিত আইনটিতে তদন্তের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়টিও যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সিআইডি। পুলিশ সদর দফতর বলেছে, খসড়া আইনটিতে ‘অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন’ এই বাক্যটি সংযোজন করা হোক। জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহার সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ৫ মার্চ এর কার্যবিবরণী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খসড়ার কাজ চলছে। চূড়ান্ত হলে এটি আমরা পরবর্তী উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন,  বর্তমানে জাল নোটের প্রচলন বন্ধে বিশেষ  ক্ষমতা আইন ও দণ্ডবিধি আছে। জাল নোট বন্ধে যে টাস্কফোর্স আছে সেই টাস্কফোর্স মনে করছে এ বিষয়ে পৃথক আইন থাকা দরকার। জানা গেছে, জাল নোট প্রতিরোধ-সংক্রান্ত এই টাস্কফোর্সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দফতর, সিআইডি, এনএসআই, ডিজিএফআই, বিজিবি, পাবলিক প্রসিডিউর, দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন বাংলাদেশ লি., সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধিরা রয়েছেন, যার সমন্বয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি এই টাস্কফোর্সের যে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে, সেখানে সিআইডির মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান প্রস্তাবিত আইনে তদন্তের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আইনে মামলা তদন্তের সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকায় আলোচ্য আইনের খসড়ায়ও তদন্তের সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি আখতারুজ্জামান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, কোনো ব্যাংকের কাউন্টার থেকে জাল নোট সরবরাহ করা হলে সে ক্ষেত্রে ওই ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আলোচ্য আইনে খসড়ার দফা ২৫-এ কেবল প্রশাসনিক জরিমানার বিধান না রেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। সভায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জি এম আতিকুর রহমান জামালী জানান, প্রশাসনিক জরিমানার বিধান কেবল প্রতিষ্ঠান হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের জন্য রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংকের কাউন্টার থেকে জাল নোট সরবরাহের ঘটনায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত হলে আলোচ্য আইনের খসড়ার দফা ১৮ ও দফা ২০-এর মধ্যে যেটি প্রযোজ্য হবে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আলোচ্য আইনে দফা ১৮ ও দফা ২০-এ কী ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, এ বিষয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি সংশ্লিষ্টরা। জিজ্ঞাসা করলে শুভঙ্কর সাহা জানান, এটি এখনো খসড়ার পর্যায়ে রয়েছে। তাই সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিষয় বলা যাচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর