সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে

মুহাম্মদ সেলিম, আগরতলা থেকে ফিরে

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে

সাক্ষাৎকারে মানিক সরকার

বাংলাদেশ-ভারতের মধুর সম্পর্ক বিনষ্ট করার জন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াশীলরা ষড়যন্ত্র করছে। তাদের লক্ষ্য পূরণে প্রতিক্রিয়াশীলরা দুই দেশের ‘বিকাশমান’ শক্তি তরুণদের টার্গেট করে মাঠে নেমেছে। তাদের প্রতিহত করতে দুই দেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে হবে। এ মন্তব্য করে সেসব অপশক্তিকে যৌথভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। গত ৬ এপ্রিল আগরতলায় মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় ‘মহাকরণ’-এ চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতি, বাণিজ্য, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের বিশ্বাস দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করে বাংলাদেশ এবং ভারতে ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাবে। বাংলাদেশ ও ভারতের বর্তমান সম্পর্ক ‘মধুর ও সুদৃঢ়’ এবং এ সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করতে দুই দেশের সরকারপ্রধান ও জনগণকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন মানিক সরকার। তিনি বলেন, এক প্রতিবেশী ভালো না থাকলে, তার প্রতিবেশীও ভালো থাকবে না। তাই ভারত ভালো থাকলে বাংলাদেশও ভালো থাকবে। দুই দেশের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকবে। পরশ্রীকাতরতা থাকবে না। এ বিষয়টি ভাবনায় রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আলাপকালে মুখ্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম-ত্রিপুরার যোগাযোগ সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি চট্টগ্রামের সঙ্গে ত্রিপুরা ও সেভেন সিস্টারের বাণিজ্যের সম্ভাবনা নিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম ও ত্রিপুরার যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে বদ্ধপরিকর দুই দেশের সরকার। দ্রুততার সঙ্গে সড়ক, রেল এবং নৌপথ তৈরির কাজ চলছে। চট্টগ্রাম-আগরতলা রুটে বিমান চলাচলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। চট্টগ্রাম-ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে বাংলাদেশ, ত্রিপুরাসহ সেভেন সিস্টার উন্নতির উচ্চশিখরে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ত্রিপুরার এ নেতা। মানিক সরকার বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতি, শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রেও আদান-প্রদান বাড়াতে হবে। দুই দেশের ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনাকে আঘাত ও বিভক্ত করতে ভিতরে-বাইরে অনেক শক্তি চেষ্টা করছে। এ অশুভ শক্তিকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিহত করতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। এ অপশক্তির বিরুদ্ধে নীরব থাকলে হবে না। শুভ শক্তির প্রয়াস ঘটিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে। এদের বিষয়ে দুই দেশ সচেতন না হলে চরম মূল্য দিতে হবে। বাংলাদেশ-ত্রিপুরার বর্তমান বাণিজ্য চিত্র তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক খুবই ভালো। তবে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পণ্য ত্রিপুরায় আসে, সে তুলনায় অনেক কম পণ্য যায় বাংলাদেশে। ত্রিপুরায় বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা আছে বলে বেশি পণ্য আমদানি হয়। আর এ বাজার ধরে রাখতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উচিত তাদের পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখা এবং মান আরও বাড়ানো।

সর্বশেষ খবর