মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া মুখোমুখি

হঠাৎ হামলা চালাতে পারেন ট্রাম্প

প্রতিদিন ডেস্ক

কোনো প্রকার আগাম ঘোষণা ছাড়াই সিরিয়ায় ৫৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে মার্কিন সেনাবাহিনী। এর জের শেষ না হতেই সবচেয়ে বড় অপারমাণবিক বোমা ফেলা হয় আফগানিস্তানে। এর সবগুলোই কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরমধ্যে তিনি অনেকটা ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়া যদি বাড়াবাড়ি করে তবে সেখানে ভয়ঙ্কর হামলা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প এমন একজন মানুষ যিনি বলে কয়ে সব কিছু করেন না। তিনি উত্তর কোরিয়ায় আচমকা আঘাত হানার কথা ভাবতে শুরু করেছেন। এমন কী আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল এইচআর ম্যাকমাস্টারকে সে বিষয়ে জরুরি নির্দেশও দিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ড ইতিমধ্যেই কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে উত্তর কোরিয়ার দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। যেদিন থেকে মার্কিন নৌবহর যাত্রা শুরু করেছিল কোরীয় উপদ্বীপের দিকে, সেই দিন থেকেই সুর ক্রমে চড়াতে শুরু করেছেন কিম জং উন। মার্কিন নৌসেনার দিক থেকে কোনো রকম প্ররোচনা এলেই আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে পরমাণু হামলা চালানো হবে বলেও হুঁশিয়ারিই দিয়েছে পিয়ংইয়ং। শনিবার পিয়ংইয়ং-এ এক বিরাট সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে কিম জং উন গোটা বিশ্বকে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রসম্ভার সম্পর্কে জানাতে চেয়েছেন। তার পর দিন, অর্থাৎ রবিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে কিম ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। কিম অবশ্য পিছু হঠতে নারাজ। উত্তর কোরিয়া ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার আয়োজন শেষ করে এনেছে এবং ষষ্ঠ পরমাণু বিস্ফোরণটিও ঘটাতে চলেছে, দাবি দক্ষিণ কোরিয়ার। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে সে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু নিজের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মাধ্যমে তিনি বার্তা দিয়ে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়া আর কোনো প্ররোচনামূলক আচরণ করলে আমেরিকা কঠোর পদক্ষেপ করতে কোনো দ্বিধা করবে না। সেই কঠোর পদক্ষেপ যে আচমকা হামলা, তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তার প্রমাণ সিরিয়া ও আফগানিস্তান। রবিবার উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর, পিয়ংইয়ংয়ের আচরণকে ‘প্ররোচনামূলক এবং স্থিতিশীলতা ধ্বংসকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল ম্যাকমাস্টার। উত্তর কোরিয়ার আচরণ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকমাস্টার জানিয়েছেন, আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোয়েন্দা বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকতে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। মূলত উত্তর কোরিয়া রবিবার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ম্যাকমাস্টার অত্যন্ত কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন। তবে এসব হুমকি-ধমকিকে থোড়াই কেয়ার উত্তর কোরিয়া নেতার। তার সাফ জবাব পারমাণবিক হামলা করা হলে তারা পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে জবাব দেবে। যদি পারমাণবিক শক্তিধর এ দুটি দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের যুদ্ধ শুরু হয় তাতে শুধু তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়বে। তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অর্থনীতিতে এর বিরাট প্রভাব পড়বে।

সর্বশেষ খবর