বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্রিটেনে হঠাৎ মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা

প্রতিদিন ডেস্ক

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় এসেছেন মাস কয়েক। এর মধ্যেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী ৮ জুন দেশটির পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের জুনে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট হওয়ার পর এক বছরের মাথায় এই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা। গতকাল সেন্ট্রাল লন্ডনের  ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনের এ ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তবে এজন্য তাকে অবশ্যই দেশটির পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেতে হবে। এজন্য আজ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এক বিশেষ অধিবেশন ডেকেছেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সমঝোতা প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলগুলো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে এ আশঙ্কায় আগাম নির্বাচনের এ ঘোষণা এলো। তবে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে বিরোধী লেবার পার্টির বর্তমান বেহাল অবস্থার সুযোগ নিতে চাইছেন তেরেসা মে। কারণ সর্বসাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোয় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে অনেক পিছিয়ে লেবার পার্টি। ভোটারদের কাছে কনজারভেটিভ পার্টির গ্রহণযোগ্যতা যেখানে ৪২ শতাংশ, লেবারের সেখানে মাত্র ২৭ শতাংশ। জনমত জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন এ বিবেচনায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মে তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ‘ইউগভ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত জরিপ বলছে, ৫০ শতাংশ ব্রিটিশ ভোটারের মতে তেরেসাই হবেন দেশটির সেরা প্রধানমন্ত্রী।

তবে তেরেসা মে গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিভিন্ন বক্তৃতায় বলেছিলেন, ২০২০ সালের আগে দেশটিতে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। আগের এ অবস্থান থেকে সরে এসে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন তিনি। এর পেছনে কারণ কী, তাও স্পষ্ট করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তেরেসা মে বলেন, ব্রেক্সিট বিষয়ে গণভোটের পর ব্রিটেনে যতটুকু স্থিতিশীলতা আনার দরকার ছিল তার সরকার সেটুকু করতে পেরেছে। আগাম নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এখন সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন না করি তাহলে রাজনৈতিক খেলা অব্যাহত থাকবে এবং পূর্বসূচি অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে ইইউর সঙ্গে প্রক্রিয়া সবচেয়ে জটিল ধাপে পৌঁছাবে।’ তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও অতি সম্প্রতিই আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী মে আরও বলেন, ইইউর সঙ্গে ব্রেক্সিট সমঝোতার প্রক্রিয়াকে বিরোধী দলগুলো হুমকির মুখে ফেলুক সে সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত নন। তার ভাষায়, ‘বিরোধী দলগুলো মনে করে যে যেহেতু বর্তমান সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুবই সামান্য তাই ব্রেক্সিট সমঝোতা-সংক্রান্ত আমাদের প্রতিশ্রুতি দ্রুত হয়ে পড়বে এবং এ ক্ষেত্রে তারা আমাদের পথ পরিবর্তনে শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে। তাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি ভুল।’ প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টিও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলে খবরে বলা হয়েছে। বিবিসি, রয়টার্স।

সর্বশেষ খবর