শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ডিএনসির নতুন জোন হচ্ছে টেকনাফে

থাকছে অস্ত্রের সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইয়াবার আগ্রাসন ঠেকাতে টেকনাফের মিয়ানমার সীমান্তে হচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর—ডিএনসির নতুন জোন। স্বতন্ত্র এই জোনের কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিরাপত্তা এবং অপারেশনের জন্য অস্ত্রের সুবিধা চেয়ে শিগগিরই একটি প্রস্তাব পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে। এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখতে সার্বিক তথ্যসংবলিত একটি অনলাইন সিস্টেম তৈরির কথা বলেছেন ডিএনসির মহাপরিচালক (ডিজি) সালাহ্উদ্দীন মাহ্মুদ। গতকাল নিয়মিত মাসিক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও কথা বলেন পরিচালক (অপারেশন) তৌফিক উদ্দীন আহমেদ। সালাহ্উদ্দীন মাহ্মুদ বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি আমরা। সাজাভোগের পরও যাতে কেউ আবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়াতে না পারেন সেজন্য শিগগিরই একটি অনলাইন সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। যেখানে তাদের সব ধরনের তথ্য থাকবে। এ নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। আমাদের কাছে যে তথ্য-উপাত্ত আছে সেগুলো কম্পিউটারাইজড হলে অন্য বাহিনীর সঙ্গে কানেক্ট করা সহজ হবে এবং আসামিদের ওপর নজরদারিও বৃদ্ধি পাবে।’ তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুটি বিভাগে ভাগ হওয়ার পর ডিএনসিতে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক উদ্ধারের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এর পাশাপাশি আমরা সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করে যাচ্ছি। তবে প্রথমে সচেতন হতে হবে পরিবারকে। কারণ একমাত্র বাবা-মাই পারেন তার ছেলে কখন কী করছে, কার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে এসব কিছুর খবর রাখতে।’ ডিজি বলেন, ‘ডিএনসির কোনো কর্মকর্তা যদি অপরাধ করেন তাকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এক মাসে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। সম্প্রতি ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে গডফাদার আফসার আলীকে ধরা হয়েছে। ডিএনসির কর্মকর্তারা নিরস্ত্র হয়েও র‌্যাব-পুলিশের সহযোগিতায় যে ভূমিকা পালন করছেন তাতে অনেকাংশেই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’ ডিএনসির কর্মকর্তারা নিরস্ত্র হয়েও অস্ত্র উদ্ধার করছেন জানিয়ে ডিএনসির পরিচালক (অপারেশন) তৌফিক উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এক বছরে বিভিন্ন অভিযানে ১০টি অস্ত্র উদ্ধার করেছেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। সম্প্রতি যশোরে এক অভিযান থেকে দুটি অস্ত্র, ১০টি গুলিসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের সুরক্ষার জন্য অস্ত্র কাছে রাখেন। সে ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি আমাদের আর্মসের অনুমতি দেয় এবং র‌্যাব-পুলিশ আরও সতর্ক অবস্থানে থাকে তাহলে সমস্যা হবে না। গাঁজা সীমান্তবর্তী নো-ম্যান-ল্যান্ড এলাকায় চাষাবাদ হতো। বর্তমানে বিএসএফ সেগুলো ধ্বংস করে আমাদের ছবি পাঠাচ্ছে। ফেনসিডিলের অনুপ্রবেশও কমে গেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে মার্চের মাদকদ্রব্য উদ্ধারের একটি বিবরণমূলক চিত্রও উপস্থাপন করা হয়। সে অনুযায়ী মার্চে সব সংস্থা মিলে ২৫ কেজি হেরোইন, ৫ হাজার ৮২৫ কেজি গাঁজা, ৩৪ হাজার ৩৫১ লিটার দেশি মদ, ১৮ হাজার ৬০৮ বোতল বিদেশি মদ, ২২৪ লিটার বিদেশি মদ, ১৬ হাজার ৩৬৬ ক্যান বিয়ার, ৩২৫ বোতল বিয়ার, ৫১ হজার ৩০০ বোতল ফেনসিডিল, ৩ কোটি ৫১ লাখ ৬১৯ পিস ইয়াবা এবং ১৯ হাজার ৯৫৫ অ্যাম্পুল ইনজেকটিং ড্রাগ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে ১১ হাজার ১০৩ জনকে আসামি করে ৮ হাজার ৭১৯টি মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর