শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞ মত

ছয় মাসেই ঢাকার চেহারা পরিবর্তন সম্ভব

—স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন

ছয় মাসেই ঢাকার চেহারা পরিবর্তন সম্ভব

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেছেন, ‘ঢাকার দুর্ভোগ পরিস্থিতি পরিবর্তনে সময় প্রয়োজন মাত্র ছয় মাস। মেয়রের অধীনে সেবা সংস্থাগুলো দেওয়া হলে ঢাকার এ দুর্ভোগ থাকবে না। সাতটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে অন্তত ৫৬টি সেবা সংস্থা রয়েছে। এগুলোকে মেয়রের অধীনে দিতে হবে। এখনই যে দিতে হবে তা নয়, ধাপে ধাপে সব সংস্থাই মেয়রের অধীনে দিলে জবাবদিহি বাড়বে।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘দেখা যায় এক সংস্থা একটি রাস্তা কেটে গেল, মাত্র মাটি ফেলেছে, পরদিন আরেক সংস্থা এসে আবার ওই রাস্তা কাটছে। পুরোটাই সমন্বয়হীনতা। এটা চলছেই। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। পৃথিবীতে সম্ভবত ঢাকা শহর একমাত্র শহর, যে শহরে ৫৬টি প্রতিষ্ঠান ও সাতটি মন্ত্রণালয় কাজ করে। সাত মন্ত্রণালয়ই সর্বেসর্বা। একজনের কথা আর একজন শোনে না।’ তিনি বলেন, ‘মেয়র ফুটপাথ বানাচ্ছেন, ফুটপাথের ওপর তেরছা করে লাইট পোস্ট লাগানো, টেলিফোন পোল কাত হয়ে পড়ে থাকা তা কিন্তু তিনি সরাতে পারছেন না। কারণ এটি এলজিইডির আন্ডারে না। আর এই ৫৬ প্রতিষ্ঠানের পিতা ৫৬ জন। নগরপিতা হচ্ছেন কাগজে-কলমে। এ জন্য মেয়রদের শক্তিশালী করতে হবে। তাদের অধীনে যদি আমরা এসব প্রতিষ্ঠান আনতে পারি, তবে সমন্বয়হীনতা থাকবে না। একই রাস্তা ছয়বার কাটতে হবে না। যদি সমন্বয় করে একসঙ্গে কাটা হতো, তবে ভোগান্তি কম হতো।’ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘রাস্তা খোঁড়া হয়। ওয়াসা বা তিতাস খুঁড়ছে। কিন্তু আমরা বহুবার এসব প্রতিষ্ঠানকে বলেছি, এখন বিশ্বের অনেক দেশে মাটি খোঁড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ট্রাকে তোলা হয়। কিন্তু এখানে তা করা হচ্ছে না। বরং মাটি পাশেই রেখে দেওয়া হচ্ছে। ওই মাটি দিয়ে গর্ত পূরণ করা হচ্ছে। ওপরে ছয় ইঞ্চি বালি দেওয়া হচ্ছে। মূলত পুরোটাই বালি দেওয়ার কথা। তবে বিশ্বব্যাংকের টাকায় যেসব কাজ করা হচ্ছে, সেখানে ওই পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে। সাইনবোর্ডে লেখা থাকে, যার মাটি দরকার বিনা পয়সায় নিতে পারবেন।’ তিনি বলেন, ‘মানুষকে এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে হবে। কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে এসব সেবা সংস্থায়।’ স্থপতি মোবাশ্বের বলেন, ‘নগরপিতাকে ক্ষমতায়ন করতে হবে। সরকারের উচিত, সাতটি মন্ত্রণালয় ও ৫৬টি সেবাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ছাতার মতো মেয়রকে বসানো। তারা মেয়রের জবাবদিহিতে থাকবে। মন্ত্রণালয় সারা দেশ নিয়ে থাকবে। কিন্তু ঢাকা শহরে কিছু করতে হলে মেয়রের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এটা করতে পারলে ঢাকা শহরের দুঃখ-কষ্ট অন্তত ৫০ ভাগ কমানো সম্ভব। এতে জনগণ সেবা পাবে।’ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘রাজধানীর উন্নয়নে কাজ যত দেরি, রেট তত বেশি। ঠিকাদাররা ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন কাজ নেওয়ার আগে একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু সেটা মানেন না। চুক্তিপত্র না মেনে তারা কীভাবে বিল নিয়ে যান!’

 

সর্বশেষ খবর