রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

লেজেগোবরে সংগঠন নিয়েও ভোটে যাবে জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়েই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। গত কয়েক বছর ধরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ভালো ফল ঘরে তুলতে পারেনি দলটি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থীই দিতে পারেনি দলটি। তবে নেতাদের দাবি, স্থানীয় নির্বাচন দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তুলনা করা যায় না। জাতীয় পার্টি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে আগে দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার কাজে মনোনিবেশ করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলা সফরে গিয়ে নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয়ের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। দলের সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা কাটিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতির দিকে এগোনোর চিন্তা করছে জাতীয় পার্টি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবগুলো আসনে প্রার্থী দেওয়ার টার্গেট করেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। তবে সারা দেশে দলটির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক। লেজেগোবরে সাংগঠনিক অবস্থা নিয়েই ভোটের মাঠে নামছে জাপা। জানতে চাইলে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৩টিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার দ্বিতীয় মেয়াদের মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৯টি জেলায় কাউন্সিল সম্পন্ন করেছেন। সিলেট জেলায় বন্যার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। আর বাকিগুলো ঈদের পর সম্পন্ন হবে। সূত্র জানায়, পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার পার্টির সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সারা দেশে সাংগঠনিক সফর করছেন তিনি। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন। জানা যায়, ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ আসনের প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা তৈরি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে দলের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে দায়িত্ব দিয়েছেন এরশাদ। সে অনুযায়ী সম্প্রতি দলের তৃণমূল পর্যায়ে একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে কেন্দ্র থেকে। জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো।  জানা যায়, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দল নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির বাইরে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে জাতীয় পার্টি। আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কৌশল হিসেবে সরকার ও বিরোধী উভয় শিবিরেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ। দুই দিকে যোগাযোগ রক্ষা করতে দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেও দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। জাপার কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে প্রতি জেলায় আলাদা সমন্বয় কমিটি গঠন শেষ হলেই ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজে হাত দেবেন এরশাদ। এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ বলেন, জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের একটি জাতীয় পার্টি। দলকে আরও শক্তিশালী করতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আমরা ৩০০ আসনে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সর্বশেষ খবর