রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

অফিসার্স মেসে মিলল সহকারী পুলিশ কমিশনারের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

অফিসার্স মেসে মিলল সহকারী পুলিশ কমিশনারের লাশ

সাব্বির আহমেদ সরফরাজ

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সরফরাজ নগরীর রাজপাড়া থানা জোনে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন ৩১তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। সরফরাজের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বাবুপুরে। তার বাবা মো. ওবায়দুল্লাহ রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন। সরফরাজ (৩৩) নগরীর উপশহরের একটি বাসায় স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। আরএমপির মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে আরএমপির একটি অফিসার্স মেস আছে। সেখানে তার একটি কক্ষ আছে।

সেখানে গিয়ে বিশ্রাম করতেন সরফরাজ। গতকাল সকালে ওই কক্ষেই তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। ইফতে খায়ের আলম জানান, জানালার গ্রিলের সঙ্গে নাইলনের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সরফরাজের লাশ পাওয়া গেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাশ সম্পর্কে খবর পান। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বোয়ালিয়া জোনের একটি অপারেশনে অংশ নিয়ে অফিসার্স মেসে ফিরে আসেন সরফরাজ। সরেজমিনে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, লাশটি তখনো উদ্ধার করা হয়নি। অফিসার্স মেসটির ভিতরে আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা অবস্থান করছেন। মেসের ভিতরে সাংবাদিকদেরও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. এনামুল হক ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কক্ষের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ আছে। ওই কক্ষে ঢোকার আর কোনো রাস্তা না থাকলে এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না গেলে একে আত্মহত্যা বলা যাবে।

সহকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, সরফরাজ বিবাহিত। তার তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। তিনি পরিবার নিয়ে রাজশাহীর উপশহরের বাসায় থাকতেন। তার স্ত্রী সূচনা রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, নগরীর শ্রীরামপুরে পুলিশ অফিসার্স মেসে নিজ কক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ছিলেন সরফরাজ। তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে পা সোফার সঙ্গে লাগানো ছিল। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন তার বাবা এম ওবায়দুল্লাহ। পরে সন্ধ্যায় তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ জানান, সরফরাজের লাশ যে অবস্থায় পাওয়া গেছে, তাতে সন্দেহ আছে। ফলে তিনি একে আত্মহত্যা বলে মনে করছেন না। এ কারণে তারা লাশের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আরএমপির সাবেক কমিশনার ওবায়দুল্লাহ জানান, তিনি না পৌঁছা পর্যন্ত সরফরাজের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা যাবে না বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তিনি নিজে ছেলের লাশ দেখার পর সরফরাজের দেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়।

সর্বশেষ খবর