সোমবার, ৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনে না এলে বিএনপির কপাল আরও পুড়বে

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

নির্বাচনে না এলে বিএনপির কপাল আরও পুড়বে

সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির পোড়া কপাল আরও পুড়বে বলে মনে করেন সাবেক এমপি রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুলের যে মাশুল দিচ্ছে, আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে দলটিকে তার চেয়েও বেশি মাশুল গুনতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও রংপুর জেলা কমিটির উপদেষ্টা সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যদি আবারও জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তাহলে দলটির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আমার বিশ্বাস বিএনপি আর ভুল পথে হাঁটবে না। জাতীয় পার্টির নতুন জোট গঠন প্রসঙ্গে মেয়র ঝন্টু বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যেসব দলকে নিয়ে জোট করতে চাইছেন, সেসব দলের ভোট আছে বলে মনে হয় না। সভাপতি-সম্পাদক সর্বস্ব দলগুলো এরশাদের ওপর ভর করে নিজেদের অস্তিত্ব চাঙ্গা করতেই জোট গঠনে সম্মত হয়েছে।  ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ঝন্টু বলেন, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। গত আট বছরে দেশে যত উন্নয়ন হয়েছে ইতিপূর্বে এত উন্নয়ন হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশ আজকে উন্নয়নের মহাসড়কে। রংপুরেও উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়েছে। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে নাগরিক কমিটির প্রার্থী ঝন্টু বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে নগরপিতা হয়েছিলেন। সিটি করপোরেশনের আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে দলীয় প্রতীকে। সে কারণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান ঝন্টু। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনে মেয়র হওয়ার মতো আওয়ামী লীগে যোগ্য প্রার্থী নেই। আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে ‘উন্নয়নের প্রতীক নৌকার’ মান রক্ষা করব। বিজয়ের মালা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেব।  এই আত্মবিশ্বাসের কারণ সম্পর্কে ঝন্টু বলেন, ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দিয়েই রংপুরের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আমাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন। মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে দলটির সাবেক নেতা ঝন্টু বলেন, রংপুরে এখন জাতীয় পার্টির সেই ইমেজ আর নেই। রংপুরের মানুষ জাতীয় পার্টির ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের স্রোতে ‘এরশাদ আবেগ’ হারিয়ে গেছে। রংপুরবাসী তার প্রমাণও দিয়েছে দশম জাতীয় সংসদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। তিনি জানান, জেলার ৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী জিতেছেন মাত্র ৭টিতে। পৌরসভা নির্বাচনে রংপুরের তিনটি পৌরসভার মধ্যে হারাগাছ ও পীরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থীই দিতে পারেনি দলটি। বদরগঞ্জ পৌরসভায় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ১৭১ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে আট উপজেলার একটিতেও দলটির প্রার্থীরা জয় পাননি। এমনকি সদর উপজেলায় স্বয়ং এরশাদ প্রচারে নেমেও কোনো সুবিধা করতে পারেননি। এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি আসনেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচিত হলেও নবম সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসন চলে যায় আওয়ামী লীগের ঘরে। আর দশম সংসদ নির্বাচনে আসন পান দুটি। আশা করি সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও নগরবাসী জাতীয় পার্টিকে লালকার্ড দেখাবে।

সর্বশেষ খবর