মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সুপ্রিম কোর্ট থেকে বঙ্গভবনের দূরত্ব কত : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা দীর্ঘ আড়াই বছরেও গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে আপিল বিভাগ। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জানতে চেয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে বঙ্গভবনের দূরত্ব কত? গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এক সপ্তাহ সময় দেয়। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে একটি ফাইল উপস্থাপন করলে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি কী নিয়ে এসেছেন? অ্যাটর্নি জেনারেল মৃদু হেসে সময় আবেদনের কথা জানালে প্রধান বিচারপতি বলেন, গেজেট কোথায়? আমরা তো মনে করেছি এটা গেজেট। প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর কোনটি? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জাপানের টোকিও শহরের কথা জানান। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, সবাই মনে করে টোকিও বা নিউইয়র্ক সবচেয়ে বড় শহর। বলুন তো নিউইয়র্ক বা টোকিওর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে কত সময় লাগতে পারে? বড়জোর পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। কিন্তু আমার ধারণা ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর। মনে হয়, সুপ্রিম কোর্ট থেকে গণভবন বা বঙ্গভবনের দূরত্ব কয়েক লাখ কিলোমিটার। তাই আড়াই বছরেও গেজেটটি এ পথ পাড়ি দিতে পারেনি। আড়াই বছরে যেহেতু এই দূরত্ব পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়নি, মনে হয় আড়াই হাজার বছরেও তা সম্ভব হবে না!  এর আগে গত ৪ এপ্রিল আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষকে ৮ মে পর্যন্ত সময় দেয়। কিন্তু এ দিনও রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করে। গেজেট প্রকাশের জন্য এ নিয়ে ১২ বারের মতো সময় নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে আপিল বিভাগ যে রায় দেয়, তাতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা তৈরির নির্দেশনাও ছিল। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে এর আগে এক শুনানিতে জানায় আপিল বিভাগ। পরে ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

সর্বশেষ খবর