বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করছে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলীয় ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবারের ইশতেহারে দক্ষ মানবশক্তি ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাত এবং যোগাযোগকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তরুণ ও নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নতুন কিছু পরিকল্পনাও যুক্ত করা হবে। আগামী ১৯ মে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া উপস্থাপন করা হবে বলে দলীয় দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০  দিনের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে হিসাবে ১৭-১৮ মাসের মতো বাকি আছে নির্বাচনের। তাই এখন থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দলটি। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করা হচ্ছে। আগামী ১৯ মে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পরদিন অর্থাৎ ২০ মে বর্ধিত সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এ সভায় জেলা নেতারা অংশ নেবেন। গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী বৈঠকে ইশতেহারের খসড়ার অনুমোদন নেওয়া হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ২০ মে দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র, সদস্য সংগ্রহ ফরমসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জেলা নেতাদের হাতে তুলে দেবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ধানমন্ডিতে দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ জন্য আলাদা আলাদা সেল গঠন করে কাজ করারও পরামর্শ দেন তিনি। দলীয় সূত্রমতে, ইশতেহারে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল, সুশাসন, গ্রামীণ জীবনযাত্রার উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, কৃষি, শিল্পায়ন এবং দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি ইশতেহারে সরকার এবং রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য অর্জন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, নারী কর্মসংস্থান, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, ১০০টি অর্থনৈতিক জোন, নারী উন্নয়ন ও নারী নীতি বাস্তবায়নের বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকবে। দুর্নীতি রোধে গৃহীত পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করা হবে। এ ছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত বিষয়গুলো অগ্রগতি বিবেচনায় নিয়ে এবারের ইশতেহারে প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন আনা হবে। দলীয় সূত্রমতে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগ ও সরকারের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ও সরকারি কর্মসূচিগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্বাচনমুখী হওয়ার নির্দেশনাও দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সেরে ফেলা হয়েছে। সরকারি দুটি সংস্থার মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থী ও বর্তমান এমপিদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী ২০ মে দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র জেলা নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর