শনিবার, ১৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত অবৈধ : হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা সংক্রান্ত ২০০৯ সালের আইনের ১৪টি ধারা ও উপধারাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে এই আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত পৃথক তিন ব্যক্তির দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেওয়া হয়। আদালত ওই তিন ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া সাজা বাতিল ও তাদের একজনের কাছ থেকে নেওয়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা রায়ের কপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। রায়ের পর রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, এখন থেকে আর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। মোবাইল কোর্ট করতে হলে সরকারকে আইন সংশোধন করতে হবে অথবা নতুন করে আইন তৈরি করতে হবে। জানা গেছে, ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এসথেটিক প্রপার্টিজের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর তিনি মোবাইল কোর্ট আইনের কয়েকটি ধারা ও উপধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন।

এ ছাড়া ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর টয়েনবি সার্কুলার রোডের এক বাড়ির মালিক মজিবুর রহমানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আইনের বিধান সংশোধন ও অর্থ  ফেরতের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন মজিবুর রহমান। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের কয়েকটি বিধানের  বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালের ২ মে দিনাজপুরের  বেকারি মালিকদের পক্ষে মো. সাইফুল্লাহসহ ১৭ জন আরেকটি রিট করেন। এই তিনটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার উক্ত রায় ঘোষণা করে।

আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেন, রিটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বিচার করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ওই ধারাগুলো সংবিধান, মাসদার হোসেন মামলার রায় ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী। ওই আইনের ৫ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০ ধারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা পদ্ধতি, ১১ ধারায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া ক্ষমতা, ১৩ ধারায় আপিল ও ১৫ ধারায় তফসিল সংশোধনে সরকারকে দেওয়া ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর