সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিপীড়নের জগতে নীরবতা ভাঙাই বড় লড়াই

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

নিপীড়নের জগতে নীরবতা ভাঙাই বড় লড়াই

প্রতিটি নারী-শিশুই প্রতিনিয়ত যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা নিয়ে বড় হচ্ছে। সেই নিপীড়নের ঘটনা প্রকাশিত হলে আরও বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে কিংবা লোকলজ্জার সম্মুখীন হতে হবে এ ভয়ে তারা খবরটা বাইরে প্রকাশ করতে চায় না। কিন্তু নিপীড়নের জগতে এই নীরবতা ভঙ্গ করাই হচ্ছে বড় লড়াইয়ের কাজ। গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে দেশব্যাপী চলমান যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার স্লোগান সামনে রেখে এর আয়োজন করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। এরপর টারজান পয়েন্ট, মুরাদ চত্বর, পরিবহন চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনের মুন্নি চত্বরে গিয়ে এটি শেষ হয়। মুরাদ চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য নিপীড়নকারীদের মুখোশ সমাজের সামনে তুলে ধরতে হবে। এর জন্য যারা নিপীড়নের শিকার হন তাদের নীরবতা ভঙ্গ করতে হবে। আর সেটি না করলে দুর্বৃত্তদের জন্য সুবিধা হয়। কারণ দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে না পারলে তাদের ভালোমানুষী যে মুখোশ তা থেকে যায়। এই মুখোশ নিয়ে তারা পরবর্তী সময়ে বড় বড় পদে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নিপীড়নের কাজ অব্যাহত রাখে। বনানীতে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে শুধু এই নীরবতা ভঙ্গ করার কারণে। যারা নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে এই সাহসী কাজটি করেছেন তাদের আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ নীরবতা ভঙ্গ না করলে এই দুর্বৃত্তরা তাদের অপকর্ম চালিয়েই যেত। পাশাপাশি এদের মতো দুর্বৃত্ত আরও যারা আছে তারাও নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে করত। তারা ভাবত, যা খুশি তা-ই করা যাবে, কেউ তাদের কিছু করতে পারবে না। বনানীর ঘটনায় যে দুজন আক্রান্ত হয়েছে তাদের লড়াইটা মূলত এখনই শুরু হবে। তারা যখন মামলা-আদালত এসবের ভিতর দিয়ে যাবে, আবারও তাদের নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হবে।’

সর্বশেষ খবর