বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাংবাদিক মারলেন এমপি হারুনের সমর্থকরা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ বিষয়ে ‘ফেসবুকে একটি পোস্টে লাইক দেওয়ায়’ ঝালকাঠিতে এমপি বি এইচ হারুনের সমর্থকরা দৈনিক বরিশাল প্রতিদিনের কাঁঠালিয়া প্রতিনিধি এইচ এম বাদলকে মারধর করেছে।

বাদল জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কিবরিয়া সিকদারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাদল বলেন, রেইনট্রি হোটেলে ছাত্রী ধর্ষণ, হোটেল থেকে মদ উদ্ধার ও সংসদ সদস্য হারুনকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এরই একটি সংবাদে ফেসবুকে লাইক দিয়েছি কেন— জানতে চেয়ে আমাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কিবরিয়া সিকদার ও তার লোকজন। গত মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে কাঁঠালিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের পেছনে ধরে নিয়ে এই নির্যাতন চালানো হয়। পরে আত্মীয়স্বজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রাকিব রহমান গতকাল জানান, বাদলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পা ও কোমরেও গুরুতর আঘাত আছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ঝালকাঠির আয়োজনে দুপুরে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। তারা বাদলের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবিতে আজ সকালে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সবাবেশেরও ডাক দিয়েছেন। এইসঙ্গে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে বাদলকে মারধরে নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে কাঁঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কিবরিয়া এমপির বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বাদলকে মারধর করিনি। এমপির বিরুদ্ধে লেখায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ছেলেরা হয়তো মারতে পারে।’ ফরিদপুরে সন্ত্রাসী হামলা : ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম নামে স্থানীয় এক সাংবাদিককে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছে এক সন্ত্রাসী। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে এ হামলা চালানো হয়। আহত সাংবাদিককে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সাংবাদিক নাঈম ঢাকা টাইমস টুয়েন্টিফোর ডট কমের আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি ও স্থানীয় অনলাইন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে সাংবাদিক নাঈম আলফাডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত একটি স্টুডিওতে যান। এ সময় তন্ময়-উদ-দৌলা নামে এক যুবক সাংবাদিককে জামার কলার ধরে স্টুডিও থেকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে এলোপাতাড়ি হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকে। স্থানীয়রা এ সময় এগিয়ে এলে তন্ময় চাকু উঁচিয়ে সবাইকে ভয় দেখায়। এ অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানোর পর নাঈম জ্ঞান হারালে তাকে মৃত ভেবে হামলাকারী চলে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় নাঈমকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর নাঈম জানান, তাকে মেরে ফেলার জন্যই হামলা চালানো হয়। কী কারণে তার ওপর হামলা হয়েছে— তা তিনি জানাতে পারেননি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল করিম জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবক তন্ময়কে আটকের চেষ্টা চলছে। এদিকে সাংবাদিক নাঈমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা অবিলম্বে সন্ত্রাসী তন্ময়ের গ্রেফতার দাবি করেন।

সর্বশেষ খবর