শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

কথা হবে হাসিনা-ট্রাম্পের

জুলকার নাইন

কথা হবে হাসিনা-ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর আগামী সপ্তাহে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যোগ দেবেন আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে। এখানেই প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দুই  দিনব্যাপী সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে কথা বলবেন ট্রাম্প। এর একাধিক সেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমন্ত্রিত। এ ছাড়া সৌদি সরকারের রাজকীয় সংবর্ধনা ও নৈশভোজেও একে অপরের সঙ্গে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এসবের বাইরে দুই শীর্ষ নেতার একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। সফর শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে এই বৈঠকের ভাগ্য জানা যাবে। তবে ঢাকা-ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলোর দাবি, ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকের সূচি নির্ধারণ হোক বা না হোক সৌদিতে একাধিকবার সাক্ষাৎ হবে ট্রাম্প-হাসিনার। ঢাকায় কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন উপলক্ষে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে ২০ মে প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের সফরে সৌদি আরবে যাবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পও ২০ ও ২১ মে সেখানে থাকবেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সদস্যদের সঙ্গে ট্রাম্পের মতবিনিময়ই এই সম্মেলনের লক্ষ্য। এ কারণে জোটভুক্ত ৪১ দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটি। ইতিমধ্যে দুই ডজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান সৌদি সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও জর্ডান, আলজেরিয়া, নাইজার, ইয়েমেন, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরাক, তিউনিশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারা যোগ দিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রাথমিক খসড়া সফরসূচি অনুযায়ী, প্রথম দিন সৌদি বাদশাহর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। দ্বিতীয় দিনে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলন, প্রতিপাদ্য— সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন। সম্মেলন শেষে একদিন সৌদি আরবে অবস্থান করে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২৩ মে তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, শেষ মুহূর্তেও অনেক সংযোজন-বিয়োজন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সফরে। এ কারণে সফরের কর্মসূচি পুরোপুরি চূড়ান্ত বলা যাবে না। সৌদি বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই সময়ে বিশ্বের অনেক নেতা রিয়াদে থাকবেন, তাই এ সাক্ষাৎ কয়েকজন বিশ্বনেতার একসঙ্গে মিলিতভাবেও হতে পারে। এ ধরনের প্রত্যাশা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের ক্ষেত্রেও। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর তথ্যানুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি বাদশাহ ও সৌদি সরকারের প্রতিনিধিদের বাইরে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) ছয় জাতির নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন। সম্মেলন উপলক্ষে রিয়াদে উপস্থিত হওয়া মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলাদা আলাদা বৈঠক বা সাক্ষাৎ আয়োজনের প্রস্তুতির কথা এসেছে মার্কিন গণমাধ্যমেও। জানা যায়, সৌদি আরব ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলিম দেশগুলোর সমন্বয়ে সামরিক জোট  ঘোষণা করে। শুরু থেকেই এই জোটে আছে বাংলাদেশ। জোটের বেসামরিক অংশে বাংলাদেশ সহযোগিতা দিয়ে যাবে। পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বলেন, সৌদি আরবের সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপে সাড়া দিতেই সৌদি নেতৃত্বাধীন এ জোটে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে বাংলাদেশের গুরুত্ব বোঝাতে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে  যোগদান বাংলাদেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। তা ছাড়া বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান মুসলিম উম্মাহ ও আমেরিকান নেতাদের অবহিত করাও গুরুত্ববহ।

সর্বশেষ খবর