মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
জবাবদিহিতা

জঙ্গি তৎপরতা ও অপরাধ দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডিএমপি

মো. আছাদুজ্জামান মিয়া

জঙ্গি তৎপরতা ও অপরাধ দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডিএমপি

সমাজের সর্বস্তরের লোক এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় ও যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদসংক্রান্ত অগ্রিম তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়মিতভাবে ব্লক রেইড এবং চেকপোস্ট পরিচালনার মাধ্যমে দৃশ্যমান পুলিশি তত্পরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফোর্স ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত অপরাধ বিভাগসমূহে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রবর্তিত বিট পুলিশিং কার্যক্রম ও উঠান বৈঠক কার্যকরভাবে প্রচলনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। ভাড়াটিয়া তথ্য সংগ্রহ ফরম কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বাড়ির মালিককে অবশ্যই নতুন ভাড়াটিয়ার আগমন বা প্রত্যাগমন সম্পর্কে তথ্য প্রদানের ব্যাপারে সচেতন করা হয়েছে। সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান/সংস্থা/হোটেল/ ক্লাব/রেস্টুরেন্ট মালিকের সঙ্গে সচেতনতামূলক সভা আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যালোচনা ও জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে ডিএমপি নির্দেশিত সিকিউরিটি ডিভাইস যেমন আর্চওয়ে, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, লাগেজ স্ক্যানার, ভেহিক্যাল আন্ডারসার্চ মিরর, ম্যানুয়াল চেকিং, আলোর ব্যবস্থা, প্রাইভেট সিকিউরিটি বাহিনী মোতায়েন (যার জন্য যেটি প্রযোজ্য) প্রবর্তন করা হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট সিকিউরিটি ফোর্স মোতায়েন করেছে তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে কিনা, তা সংশ্লিষ্ট এসি (পেট্রল)/পিআই/থানা পেট্রলের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ক্লাব/তারকা হোটেল/বিদেশি শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাসমূহ যাতে ফাংশনাল থাকে এবং রেকর্ডার ঠিকভাবে কাজ করে সেই লক্ষ্যে তাদের নিয়মিতভাবে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। থানা এলাকায় অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ইত্যাদি) এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে (মসজিদ, মন্দির, চার্চ ইত্যাদি) পুলিশ কর্মকর্তারা নিয়মিত পরিদর্শন করছেন এবং জনগণকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এসব বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গৃহীত পুলিশি কার্যক্রমে জনগণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ কার্যকর ও টেকসইকরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রোধে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে ডিএমপির পক্ষ থেকে। এলাকায় মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরিপূর্বক এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সামাজিকভাবে প্রতিহত করার প্রয়াসও চলছে। সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি এবং এ ব্যাপারে কার্যকর সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশের কোনো সদস্য এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স পলিসি কার্যকর। প্রত্যেক এলাকার রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ; জনপ্রতিনিধি; কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নেতা এবং পুলিশ সমন্বয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিস্তার রোধে সমন্বয় সভা করে জনমত গঠন এবং সমন্বিতভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট অপরাধী চক্রের তত্পরতা রোধে পাড়া/মহল্লায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি লক্ষ্য এবং নজরদারি করার পাশাপাশি কোনো ব্যক্তির সন্দেহজনক আচরণ পরিলক্ষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারকে কিংবা থানায় অবহিত করার লক্ষ্যে নাগরিকরা তত্পর হয়ে উঠেছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, অপরাধপ্রবণতা হ্রাস, ট্রাফিক-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বিভাগীয় দায়িত্ব পালন এবং অধস্তন কর্মকর্তা ও সদস্যদের কর্মকাণ্ড কার্যকরভাবে তদারকির জন্য বিধিবদ্ধ এবং আইনগতভাবে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং থানায় কর্তব্যরত অন্যান্য কর্মকর্তা নিজ অধিক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে আইনানুগ ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন, অধস্তনদের কর্মকাণ্ড তদারকিকরণ এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। লেখক : কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

সর্বশেষ খবর