বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে দূরে থাকবে ভারত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে দূরে থাকবে ভারত

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশ যদি নির্বাচনে সহায়তা চায়, ভারত তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। সহায়তার ধরন বাংলাদেশের প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করবে বলেও উল্লেখ করেন হাইকমিশনার। গতকাল বাংলাদেশ জাতীয় ডিপ্লোমেটিক কারেসপনডেন্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ডি-ক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি ভারতের এ অবস্থানের কথা জানান। অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার এটাও জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে সবসময়ই দূরে থাকার চেষ্টা করে ভারত। যেকোনো সময়ের চেয়ে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন হাইকমিশনার। আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, ‘আপনাদের (বাংলাদেশের) কী দরকার তা আমরা বলতে পারব না। আপনারা জানাবেন, কী দরকার? আমরা তা করব।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত জুলাইয়ে গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর আমরা কিন্তু আপনাদের বলিনি—এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। এ ঘটনার পরপরই আমাদের (ভারত) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনাদের (বাংলাদেশ) প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাদের প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছেন, আপনাদের কী দরকার? কমান্ডো ট্রেনিং, বিশেষ ইকুইপমেন্ট নাকি নজরদারি ইকুইপমেন্ট? আপনারা বলুন কী দরকার? একইভাবে নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশকে বলতে হবে, কী প্রয়োজন? আমরা তা করব। কিন্তু অনুরোধ বাংলাদেশের কাছ থেকেই আসতে হবে।’

আগামী নির্বাচনের আগে তিস্তাচুক্তি হবে কিনা’ এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, তিস্তার পানিচুক্তি হবে কিনা বা কীভাবে হবে সেটি আমি জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, আমাদের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব, এটি করা হবে। এর আগে সূচনা বক্তব্যে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার নিজস্ব বক্তব্যে বলেছেন, আমার সরকার এবং আপনার সরকার এ চুক্তি করবে। তিনি বলেন, তিস্তাচুক্তি সম্পন্ন হলে যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশের পাওয়ার কথা এখন তার চেয়ে বেশি পাচ্ছে। তবে তিস্তাচুক্তি হওয়া প্রয়োজন। আশা করি, দ্রুত সময়ে চুক্তিটি সম্পন্ন হবে। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে হাইকমিশনার বলেন, অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় সীমান্ত হত্যা কমেছে। চলতি বছরে এটি ২০ এর নিচে চলে এসেছে। তবে একটি মৃত্যুও সীমান্তে কাম্য নয়। তিনি বলেন, বিএসএফ জোয়ানরা জীবন রক্ষার্থে অনেক সময় গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এটিকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে ভারত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা রয়েছে। রামপালে বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, ভারত বাংলাদেশে দূষণের সৃষ্টি করছে এটা বলা ঠিক হবে না। কারণ ভারত নিজেই উৎপাদন করে বাংলাদেশকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কিছুই করবে না ভারত। তিনি বলেন, দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন জোরদার হচ্ছে। দুই দেশের মানুষের যোগাযোগও বাড়ছে প্রতিদিনই। তাই আমরা যাই করব তা দুদেশের মানুষের উপকারই হতে হবে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে উভয় দেশ যৌথভাবে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে জানান হাইকমিশনার। ডি-ক্যাব সভাপতি রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান স্বাগত বক্তৃতা করেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিনিধি।

সর্বশেষ খবর