শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

মিসরে ফের খ্রিস্টানদের ওপর হামলা, নিহত ২৮

প্রতিদিন ডেস্ক

মিসরে কপটিক খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে। খ্রিস্টানদের বহনকারী একটি বাসে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২৫ জন। রাজধানী কায়রো থেকে ২৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মিনিয়া প্রদেশের রাজধানী মিনিয়ায় গতকাল এ ঘটনা ঘটে। হামলার দায় তাত্ক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি। নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মিনা একথা জানায়।

গত মাসের মাঝামাঝি পবিত্র ধর্মীয় উৎসব পাম সানডে উদযাপনের সময় কপটিক খ্রিস্টানদের দুটি গির্জায় আইএস আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল। এ হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল আরও প্রায় ১১৮ জন। হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি সেখানে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন যা এখনো বলবৎ আছে। এর মাঝেই খ্রিস্টান এ সম্প্রদায় লক্ষ্য করে ফের হামলার ঘটনা ঘটল। প্রদেশটির গভর্নর প্রাথমিক হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়। স্থানীয় নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি দৈনিক হারেতজ জানায়, হামলার শিকার বাসটি কপটিক খ্রিস্টানদের নিয়ে মিনিয়া শহরের নিকটবর্তী সেন্ট স্যামুয়েল নামে একটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে যাচ্ছিল।  আর তখনই এটিকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। আর এতেই উক্ত হতাহতের ঘটনা ঘটে। মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালেদ মুগুহেড স্থানীয় আল-মাসরিয়া টিভিকে জানান, মিনিয়ার প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিমে একটি নির্জন সড়কে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা দুটি গাড়িতে করে এসে এ হামলা চালায়। হতাহতদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মিসরের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ হচ্ছে কপটিক খ্রিস্টান। দেশটিদে তারা নিপীড়ন-নিষ্পেষণ ও চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বিশেষ করে ২০১১ সালে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুরসি সরকারের পতনের পর থেকে এ অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

গত মার্চে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কপটিক খ্রিস্টানদের গির্জা ও তাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সংখ্যালঘু এ সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি তাদের সম্পত্তি লুটের ঘটনাও ঘটেছে।

উল্লেখ্য, মিসরে এর আগেও খ্রিস্টান এ সম্প্রদায় লক্ষ্য করে বেশকিছু সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে রাজধানী কায়রোতে এক গির্জায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছিল। আর ২০১৩ সালে মিনিয়ার একটি গির্জায় আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। এতে গির্জাটির অভ্যন্তরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

দেশটিতে গত ১৬ এপ্রিল ইস্টার সানডে উপলক্ষে কপটিক খ্রিস্টানদের দুটি গির্জায় হামলার পর থেকে এটাই হচ্ছে এ ধরনের সর্বশেষ হামলা। আইএসের চালানো ওই হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল আরও শতাধিক। সিএনএন, ইউএসএ টুডে

সর্বশেষ খবর