শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

হারিকেন আর দেখতে চাই না

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

হারিকেন আর দেখতে চাই না

চট্টগ্রামে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার প্রকল্পের কাজ চলছে শম্বুক গতিতে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘প্রকল্পের কাজ তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা। তিন বছরে ৭ লাখ মিটার চালু হবে। কিন্তু আপনারা চালু করলেন মাত্র ১ লাখ। আমি তিন বছর ধরে আপনাদের তাগাদা দিচ্ছি কাজ শেষ করতে। তিন বছর ধরেই আপনারা আমায় ‘হারিকেন’ দেখিয়েছেন। আমি আর হারিকেন দেখতে চাই না। ২০১৮ সালের মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবেই।’প্রতিমন্ত্রী গতকাল সকালে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ বিদ্যুৎ ভবনে চারটি বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রি-পেমেন্ট মিটারিং ভেন্ডিং স্টেশন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পিডিবি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তৃতা করছিলেন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিন বছরে মাত্র ১ লাখ মিটার। তার মানে বাকি ৬ লাখ গ্রাহকের জন্য মিটার দিতে লাগবে আরও ছয় বছর! তত দিনে তো আরও ৩ লাখ নতুন গ্রাহক বাড়বে। তিনি বলেন, ‘প্রি-পেইড মিটার লাগাতে আপনাদের অনীহা। কারণ এতে ‘সিস্টেম লস’ কমে যাবে। আপনাদের আয়ও কমে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ইচ্ছা করেই তিনি এসব কথা গণমাধ্যমের সামনে বললেন যাতে কর্মকর্তারা লজ্জ?া পান এবং তাদের বোধোদয় ঘটে। নসরুল হামিদ বলেন, ‘প্রি-পেইড মিটারিংয়ে কার্ড সিস্টেমে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে। ৪০ হাজার গ্রাহককে সার্ভে করতে এখন ১৪ জন লোক লাগে। এর মধ্যে কেউ আসবে, কেউ যাবে টয়লেটে, কেউ ঘুরবে— স্বাভাবিকভাবে যা হয় আর কি। তাই আমার কথা— প্রি-পেইড মিটারিং সিস্টেমে বিদ্যুৎ বিক্রির বিষয়টি থার্ড পার্টির কাছে যাক। কিন্তু তা আপনারা করবেন না। দেশ ডিজিটাল হচ্ছে, আপনারা পড়ে আছেন ট্রাডিশনালে। আপনারা একের পর এক লোক নেবেন। এই লোক নিয়োগ নিয়েও চলে দুর্নীতি।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘সারা দেশেই বিদ্যুতের সংকট যাচ্ছে। মেঘনাঘাটে বৃষ্টির কারণে টাওয়ার ভেঙে পড়ে ১৫০০ থেকে ১৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া মেকানিক্যাল কারণেও বেশকিছু পাওয়ার পয়েন্ট বন্ধ। ফলে পুরো বিদ্যুতের খুবই সংকট যাচ্ছে। তবে শনিবার পরিস্থিতি ভালো হতে শুরু করবে।’ বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমরা বিদ্যুতের বিষয়ে বুক ফুলিয়ে বলতাম। কিন্তু আজ এখানে এসে তা বলতে পারছি না। এর দায়ভার আমাদেরই নিতে হবে। কারণ সরকারপ্রধান আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু আমরা জনগণকে পুরোপুরি স্বস্তি দিতে পারছি না। আমরা সচেতন হলে, কাজের গতি বেগবান করতে পারলে এই সমস্যা আর থাকত না।’ সভায় আরও বক্তৃতা করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন প্রমুখ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর