রাজধানীর বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর প্রভাব বিস্তার করে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ। এখনো সে চেষ্টাই চলছে।
গত বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া দুই ছাত্রীর জবানবন্দিতে এ ধরনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা জানিয়েছেন, ঘটনার শুরু থেকেই তারা বনানী থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। দুই শিক্ষার্থী যখন মামলা করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয় তখন সাফাত ও নাঈম ধর্ষণের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে তাদের সামাজিকভাবে চাপে রাখার শেষ হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব বাধা উপেক্ষা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন দুই শিক্ষার্থী। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ২২ ধারার বিধানমতে ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিন তার খাসকামরায় ওই দুই ছাত্রীর সেই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান জবানবন্দি রেকর্ড করার অনুমতি দেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ২৮ মার্চ দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনাটি মামলা হওয়ার কয়েকদিন আগেই ধর্ষকদের মাধ্যমে জানতে পারে পুলিশ। বিশেষ করে সাফাত ও নাঈম ধর্ষণের ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কয়েক দফা সমঝোতার চেষ্টা চালায়। কিন্তু দুই শিক্ষার্থী তাদের কথা শুনছিলেন না। এক পর্যায়ে সাফাত ও নাঈম একজন সংসদ সদস্যের ছেলেকে দিয়ে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করে। সংসদ সদস্যের ছেলের মাধ্যমে দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কেউ যেন বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের মামলা, উচ্চবাচ্য না করে— সে বিষয়ে হুমকি দিয়েছিল। এতেও দুই শিক্ষার্থী তাদের অবস্থান থেকে না সরতে চাইলে সাফাত ও নাঈম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। উপায়ন্তর না পেয়ে বনানী থানা পুলিশ কর্মকর্তাদের মামলা না নিতে সব ধরনের চেষ্টা চালায় সাফাত ও নাঈম। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই শিক্ষার্থী যখন বনানী থানায় মামলা করতে যায় তখন তাদের নানাভাবে নাজেহাল করা হয় খোদ থানার ভেতরেই। দুই শিক্ষার্থীকে থানার ভেতরে গালিগালাজ করেন বনানী থানার ওসি। মামলা না নিয়ে উল্টো দুই শিক্ষার্থীর চরিত্র নিয়ে উল্টা-পাল্টা কথা বলেন। ডিএমপির তদন্ত কমিটির কাছে এ ধরনের তথ্য দিয়েছেন দুই শিক্ষার্থী।