বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

নেপথ্যে রাশিয়ান হ্যাকারদের মিথ্যা রিপোর্ট

কাতারের বাংলাদেশিদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

প্রতিদিন ডেস্ক

কাতারে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পরামর্শ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। কাতারে বর্তমানে তিন লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন।  ইসলামিস্ট গ্রুপগুলোকে সহযোগিতা দিয়ে আঞ্চলিক অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে উপসাগরীয় দেশ কাতারের সঙ্গে আরব দেশগুলো সম্পর্ক ছিন্ন করার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সূত্র : বাসস

দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য কাতারের সব বাংলাদেশিকে দূতাবাসের সঙ্গে পরামর্শ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের ফোন নম্বর হচ্ছে +৯৭৪৪৪৬৭১৯২৭। বিবৃতিতে কলা হয়, দূতাবাস উদ্ভূত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি যথাযথ বিশ্লেষণের এবং পর্যবেক্ষণের পরে দূতাবাস যথাযথ পরামর্শ দেবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ বজায় রেখেছে দূতাবাস। বিবৃতিতে বলা হয়, পরিস্থিতি কাতার সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এ ব্যাপারে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে দূতাবাস মনে করে।

‘মিথ্যা রিপোর্টে’র পেছনে হ্যাকাররা : যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করছেন রাশিয়ান হ্যাকারদের মিথ্যা রিপোর্টের সূত্র ধরেই কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব ও অন্য মিত্ররা। সিএনএনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এটি প্রকাশিত হয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে। এতে বলা হয়েছে, সাইবার নিয়ম ভঙ্গ করে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় একটি ভুয়া রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। আর তা করে হ্যাকাররা। এ বিষয়টি মে মাসের শেষের দিকে যাচাই করতে কাতার সফরে যান এফবিআইয়ের বিশেষজ্ঞরা। এ সময়েই ভুয়া ওই রিপোর্টের সূত্র ধরেই কাতারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধের প্রক্রিয়া শুরু করে সৌদি আরব। এতে যুক্ত হয় উপসাগরীয় আরও বেশ কয়েকটি দেশ। একে কেন্দ্র করে কয়েক দশকের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়। কাতার সরকার বলছে, ২৩ মে রিপোর্টে ভুল তথ্য জুড়ে দেওয়া হয় যে কাতারের শাসকদের সঙ্গে ইরান ও ইসরায়েলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও প্রশ্ন তোলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি তার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন? কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, (রাশিয়ার) ওই হ্যাক ও ভুয়া খবর যুক্ত করা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে এফবিআই। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, যদি কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই অভিযোগ সত্যি হয় তাহলে এটা পরিষ্কার হবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে খর্ব করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তত্পরতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে।

বিচ্ছিন্ন করার কৃতিত্ব দাবি ট্রাম্পের : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, কাতার প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করার কৃতিত্ব তার। সম্প্রতি সৌদি আরব সফরে তাকে জানানো হয়েছিল কাতার ‘জঙ্গিদের সমর্থন করছে ও অর্থের জোগান দিচ্ছে’। মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প তার টুইটারে লেখেন মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় আমি বলেছিলাম জঙ্গি অর্থায়ন ঠেকাতে হবে, এটাকে কোনোভাবেই বাড়তে দেওয়া যাবে না। দেখেন-নেতারা কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছেন। এরপর আরেকটি টুইট বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, সৌদি আরবসহ ৫০টি দেশ যে বলছে তারা চরমপন্থা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে, তা দেখে খুব ভালো লাগছে। কাতারকে উদ্ধৃত করে তারা তাদের সিদ্ধান্তও জানিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ শেষ করার লক্ষ্যে সম্ভবত এটাই শুভ সূচনা। বিবিসি

সর্বশেষ খবর