বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রামপুরা-নিকুঞ্জ ভূমি মালিকদের দুশ্চিন্তার অবসান হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রামপুরা-নিকুঞ্জ ভূমি মালিকদের দুশ্চিন্তার অবসান হচ্ছে

সাইফুজ্জামান চৌধুরী

রাজধানীর ১৫ লাখ মানুষের পাশে দাঁড়ালেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। গতকাল এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে তিনি বললেন, রামপুরা থেকে নিকুঞ্জ পর্যন্ত ভূমি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যে শঙ্কা কাজ করছে তা আর থাকছে না। খুব শিগগির তারা তাদের জমি কেনাবেচা করতে পারবেন। খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন। নামজারি করতে পারবেন। আর কোনো বাধা থাকছে না। তাদের জমি প্রত্যর্পণ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে। রামপুরা থেকে নিকুঞ্জ পর্যন্ত জমির সমস্যা নিয়ে গতকাল সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, রামপুরা থেকে নিকুঞ্জ পর্যন্ত ১৩৮ এলএ কেসে দাগের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। ১৩৮ এলএ কেসে/৬১৬২, ৯১/৫৭৫৮, ৩২/৬৭৬৮ দাগের যেসব জমি টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্টের অধীনে অধিগ্রহণের জন্য নেওয়া হয়েছিল; একসময় সরকার অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল; পরবর্তীতে তা অধিগ্রহণ না করে অবমুক্ত করে দেয়। কিন্তু রাজউক ও ঢাকা জেলা প্রশাসন এই দাগের প্রায় ১৩০০ একর ভূমি অবমুক্ত না করে ধরে রেখেছিল। বিষয়টি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা বহু আগে শেষ হয়ে গেলেও রাজউক এবং ঢাকা ডিসি অফিস নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না ছাড়ায় সমস্যা তৈরি হয়। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে রামপুরা থেকে নিকুঞ্জ পর্যন্ত এলাকার কয়েক লাখ লোকের মধ্যে কয়েক মাস ধরে ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আমার সঙ্গে দেখা করে তাদের সমস্যার কথা বলেছেন। বিষয়টি আমার নজরে আসার পর এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছি। পুরো নথিপত্র খতিয়ে দেখেছি। তারপর সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। এর পরপরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে সভা আহ্বান করেছি। এই সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ১৩৮৪ দশমিক ২৫ একর জমি প্রত্যর্পণের। তিনি বলেন, সাত দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে। গেজেট প্রকাশের পর স্থানীয় ভূমি মালিকদের জমির ব্যবহার নিয়ে আর কোনো জটিলতা থাকবে না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমিব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন, জমি খারিজে হয়রানি বন্ধ, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, নামজারিসহ সব সেবায় নাগরিক হয়রানি বন্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মানুষ খাজনা দিতে গিয়েও হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই ডিজিটাল সার্ভিসের মাধ্যমে মোবাইলে কিংবা অনলাইন ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন আত্মনির্ভরশীল। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পেছনে যারা কর প্রদান করেন তাদের অনেক ভূমিকা আছে। এখন অনলাইনে সবাই অল্প সময়ের মধ্যে কর দিতে পারছেন। অনেক সময় কর দেওয়ার সঙ্গে জরিমানা দিতে হয়। ডিজিটাল হলে সে সমস্যা থাকবে না। সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সরকার দেশের উন্নয়নে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে। যাদের জন্য এই উন্নয়ন সেই জনগণ যদি এর মূল্যায়ন করে তবে আগামীতেও আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবে। তিনি বলেন, দেশের ৮৫ ভাগ মামলা হচ্ছে ভূমিসংক্রান্ত। তাই এ সমস্যা নিরসনে সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রকল্পও এগিয়ে চলেছে। যদি ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করা যায় তবে এ-সংক্রান্ত জটিলতা অনেকটাই নিরসন হবে। সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ জীবনীর কথা বাঙালি প্রতিটি শিশু-কিশোরকে অবহিত করতে হবে। কারণ একাত্তর-পরবর্তী প্রজন্মই এ দেশের খাঁটি নাগরিক। তাদের অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে জানার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে উন্নত ও প্রযুক্তি জ্ঞাননির্ভর শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সর্বশেষ খবর