শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার জন্য হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার জন্য হুমকি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম অবৈধভাবে  অবস্থান করছে, যারা ভবিষ্যতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারা মিয়ানমার সীমান্তে মাদক দ্রব্য, অস্ত্র ও মানব পাচার, চোরাচালান, সীমান্তে মাদক উৎপাদনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে লিপ্ত। মিয়ানমার নাগরিকরা বিভিন্ন প্রকার  অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাচ্ছে। অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের দ্বারা নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে কক্সবাজার জেলার মোট জনসংখ্যার ২০ থেকে ২৫ ভাগই রাখাইন জনগোষ্ঠী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনে গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের ইস্রাফিল আলমের (নওগাঁ-৬) প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, অনুপ্রবেশকারী নাগরিকরা উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের ক্ষতিসাধন করছে। তারা শ্রমবাজার ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এসব এলাকায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক ভারসাম্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমার নাগরিকরা সীমান্ত এলাকায় একটি অপরাধ চক্র তৈরি করে জাতীয় নিরাপত্তা, জাতিগত পরিচয় ও আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতার ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে। অনেকে বঙ্গোপসাগরে জেলে হিসেবে গিয়ে বাংলাদেশি জেলেদের হত্যা করছে। মাছ ধরার ট্রলার ছিনতাই করছে। গত অক্টোবর মাসে মিয়ানমারের সীমান্ত ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও পরবর্তী সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠী ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়। ফলশ্রুতিতে নতুনভাবে বিপুলসংখ্যক মুসলিম নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজার নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

ভারতকে ট্রানজিট দিয়ে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা আয় : সরকারি দলের এ কে এম শাহজাহান কামালের (লক্ষ্মীপুর-৩) প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতকে ট্রানজিট দিয়ে এক বছরে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শুধু বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের জন্য ১৯৭২ সাল থেকে যে প্রটোকল বিদ্যমান রয়েছে, তার আওতায় গত অর্থবছরে এই টাকা আয় হয়।

বিদেশি চুক্তির ৭৪ শতাংশই আওয়ামী লীগের আমলে : জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলামের (কুড়িগ্রাম-৩) প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, স্বাধীনতার পর থেকে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের মোট ২৬৩টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে চীনের সঙ্গে ১০১টি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমঝোতা রয়েছে; ভারতের সঙ্গে রয়েছে ১৩৪টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল এবং রাশিয়ার সঙ্গে রয়েছে ২৮টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এসব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকলের মধ্যে ১৯৪টিই স্বাক্ষরিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। অপর চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকলের মধ্যে বিএনপি আমলে স্বাক্ষরিত হয়েছে ৪২টি এবং এরশাদ সরকারের আমলে ৯টি ও সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ৮টি।

সর্বশেষ খবর